ছুটির দরখাস্তে স্বাক্ষর 'জালিয়াতি', অভিযোগ রিজভীর

রুহুল কবির রিজভী
রুহুল কবির রিজভী

প্রধান বিচারপতিকে ‘বলপ্রয়োগ’ করে ছুটি দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, ছুটির দরখাস্তে প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর ‘জালিয়াতি’ করা হয়েছে।

আজ রোববার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রুহুল কবির রিজভী এসব অভিযোগ করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির ছুটির দরখাস্তে নয়টি শব্দের বানান ভুল নজিরবিহীন ঘটনা। সন্ত্রাসী কায়দায় প্রথমে প্রধান বিচারপতিকে গৃহবন্দী করে রাখার পরে এখন নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে। বর্তমানে হাসিনার সরকার কতখানি বেপরোয়া ও নীতিজ্ঞানহীন স্বৈরাচার হতে পারে, তার পরিমাপক যন্ত্র এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘একটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল শেখ হাসিনার সরকার। এখন সার্বক্ষণিক প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগের জন্য। প্রধান বিচারপতির ওপর আক্রোশের নির্দেশদাতা স্বয়ং সরকারপ্রধান।’

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন এজেন্সির লোকেরা প্রতিনিয়ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে পারলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বারবার চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত দেখা করতে পারেননি। প্রধান বিচারপতি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে অসুস্থতার কথা বলা হচ্ছে। চিকিৎসার নামে চিকিৎসক পাঠানো হচ্ছে; যা সরকারের নির্লজ্জ নাটক। তিনি বলেন, জনগণ সরকারের এসব সাজানো নাটক তিল পরিমাণও বিশ্বাস করে না। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলেই সরকারের উদ্দেশ্য সাধিত হয় এবং একদলীয় শাসনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে বিলম্ব হবে না।

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এমন আচরণের মাধ্যমে বিরোধী দল এবং বিরোধী মতের মানুষের বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মী এবং ভিন্নমত ও বিশ্বাসের মানুষেরা এখন সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হতে থাকবে। প্রতিকার পাওয়ার আর কোনো জায়গা থাকল না। সরকার সম্পূর্ণরূপে বিচার বিভাগকে আয়ত্তে নিতে পারলে অত্যাচারী সরকার বিচার বিভাগকে দিয়ে নিষ্ঠুর বল প্রয়োগে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে দমন করতে চাইবে। নিজের দুর্বিনীত ইচ্ছাকে ‘জুডিশিয়াল টেররিজমের’ মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা রাশিয়া-চীনের মতো বন্ধুরাষ্ট্রগুলোকে পাশে তো নিতে পারেনি, নিরপেক্ষও রাখতে পারেনি। এই রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমার সরকারের নীতিকেই সমর্থন করেছে। এই সরকারের সবচেয়ে বড় বন্ধু ভারতও তাদের কাঁচকলা দেখিয়ে মিয়ানমার সরকারের নীতির প্রতি সমর্থন দিয়েছে।

সাত বছর আগে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবুকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করার বিচার না হওয়ায় তীব্র নিন্দা এবং ধিক্কার জানান রুহুল কবির রিজভী।