উচ্চমাত্রার আমিষযুক্ত ধান

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষিবিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণা করে ধানের নতুন একটি জাত উদ্ভাবন করেছেন। নতুন জাতের নামকরণ করা হয়েছে ব্রি-৮১। নতুন উদ্ভাবিত জাতটির গড় ফলন হেক্টরে ৬ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে এটি হেক্টরে ৮ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এতে উচ্চমাত্রার আমিষ রয়েছে। আমিষের পরিমাণ শতকরা ১০ দশমিক ৩ ভাগ।
জাতীয় বীজ বোর্ড গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাত ব্রি ধান-৮১ কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করেছে। এ নিয়ে ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের সংখ্যা হলো ৮৬। এর মধ্যে ৬টি হাইব্রিড ধানের জাত রয়েছে।
দেশের ৮০ ভাগের বেশি ধানি জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত এসব ধানের চাষ হয় এবং এ থেকে আসে দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৯১ ভাগের বেশি।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা জানান, ইরান থেকে সংগৃহীত জাত আমল-৩-এর সঙ্গে ব্রি ধান-২৮ এর সংকরায়ণের মাধ্যমে নতুন জাত ব্রি ধান-৮১ উদ্ভাবন করা হয়েছে। ব্রি ধান-৮১ বোরো মৌসুমের জনপ্রিয় ও মেগা জাত ব্রি ধান-২৮-এর একটি পরিপূরক জাত। এটি প্রতিকূল পরিবেশে ঢলে পড়া প্রতিরোধী। জাতটির জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন। এ জাতের এক হাজার পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২০ দশমিক ৩ গ্রাম। ব্রি ধান-৮১ জাতে অ্যামাইলোজ রয়েছে শতকরা ২৬ দশমিক ৫ ভাগ এবং এতে উচ্চমাত্রায় আমিষ রয়েছে ১০ দশমিক ৩ ভাগ। এই ধানের জাতে চালের আকার লম্বা ও সরু হওয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রান্নার পর এর ভাত ১ দশমিক ৬ গুণ লম্বা হয়। জাতটিতে সুগন্ধ ছাড়া উন্নত গুণমানসম্পন্ন ধানের সব বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান থাকায় এটি রপ্তানি সম্ভাবনাময়। নতুন উদ্ভাবিত জাতটির গড় ফলন হেক্টরে ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ টন। তবে সঠিকভাবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে এটি হেক্টরে ৮ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর প্রথম আলোকে বলেন, নতুন উদ্ভাবিত জাতটি কৃষকেরা চাষাবাদ করলে ফলন বেশি পাবেন এবং বাজারে এর মূল্যও কিছুটা বেশি হবে। নতুন জাতটি নিয়ে তাঁরাও আশাবাদী।