প্রতারক বটে!

মশিউর রহমান মুন্না।
মশিউর রহমান মুন্না।

কত অভিনব কায়দায় যে প্রতারণা করা যায়, তা হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন ‌মশিউর রহমান মুন্না নামের এক ব্যক্তি। কখনো তিনি বিএনপি নেতা তারেক রহমানের এপিএস, কখনো ডিজিএফআই কর্মকর্তা, আবার কখনো এনএসআইয়ের কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতার ছেলে। এসব পরিচয় ব্যবহার করে তিনি প্রতারণা করতেন বলে পুলিশের দাবি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে কারাগারে আছেন তিনি।

মশিউরের প্রতারণার উদাহরণ দিতে গিয়ে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন শে‌খ বলেন, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের এক কর্মকর্তার কাছে ফোন দিয়ে তারেক রহমানের এপিএস পরিচয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। কয়েক দিন পর আরেকটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে নিজেকে ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে তারেক রহমানের যোগাযোগ আছে, তাঁর এপিএস আপনাকে ফোন দেয়, আপনি সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমার কাছে আপনার ভয়েস রেকর্ড আছে। আপনি আমাদের সঙ্গে মীমাংসায় না এলে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের মামলায় আপনাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’ এরপর ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, যার যার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, সবার কথার রেকর্ড তাঁর কাছে আছে। ১৫ লাখ টাকা দিলে বিষয়টি সমাধান করে দেবেন, নইলে সন্তানসহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ওই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার হুমকি দিয়ে ফোনের লাইন কেটে দেন।

ওসি বলেন, এখানেই দমে যাননি মশিউর। পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মানসিক চাপ বাড়াতে থাকেন বেসরকারি টেলিভিশনের ওই কর্মকর্তার ওপর। একপর্যায়ে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে তিনি মশিউরকে তিন লাখ টাকা দেন। কিন্তু এতে মন ভরেনি তাঁর। আরও ১২ লাখ টাকার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। ওই কর্মকর্তা তখন পুলিশের শরণাপন্ন হন। এরপর মশিউরকে আটক করে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ অক্টোবর। তাঁর কাছ থেকে ৩০টি সিম উদ্ধার করা হয়েছে। একদিনের রিমান্ড শেষে তিনি এখন কারাগারে আছেন।