শৌচাগারের ফোকর গলে আসামির চম্পট

নেত্রকোনার পূর্বধলা থানা থেকে রুবেল মিয়া (২৫) নামের এক আসামি পালিয়ে গেছেন। বুধবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে শৌচাগারের বায়ু চলাচল করার ফোকর (ভেন্টিলেটর) দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জানান, পলাতক আসামি রুবেল মিয়াকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন থানায় ওই দিন কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এস এম মোজাম্মেল, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) তপন চন্দ্র বাকালী ও আসামির সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য তফাজ্জল হোসেন। আজ সকালে তাঁদের থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ও জেলা বিশেষ শাখার (ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ) পরিদর্শক আবদুর রহমান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুবেল মিয়া পূর্বধলার গরুয়াকান্দা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে। গত সোমবার তাঁকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একই উপজেলার গায়লাপাড়া গ্রামের মোটরসাইকেলচালক মো. কাকন মিয়া (২৫) হত্যাকাণ্ডের আসামি ছিলেন। গত ২৫ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে পূর্বধলা-ডেওটুকোন সড়কের ছোচাউড়া এলাকায় যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নিতে চালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরদিন সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় কাকনের বড় ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। ২৮ আগস্ট রাতে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ময়নুদ্দিন রহমান (২২) নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। তাঁর স্বীকারোক্তিতে গত সোমবার সন্ধ্যায় রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুবেলের নামে দুর্গাপুর থানায় আরও একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন থানায় তাঁর নামে মোট চারটি মামলা আছে।

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভি রঞ্জন দেব প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বুধবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে আসামি রুবেল মিয়া বাথরুমে যান। সেখান থেকে বায়ু চলাচলের ফোকর দিয়ে কৌশলে তিনি পালিয়ে যান। ফোকরের লোহার রডগুলো জং ধরে পুরোনো হয়ে যাওয়ায় এবং তাঁর শরীর চিকন হওয়ায় তিনি সহজে পালাতে পারেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে। পালিয়ে যাওয়ায় তাঁর নামে আরও একটি মামলা করা হয়েছে।’