কী দোষ ছিল গাছগুলোর!

কলাচাষি ও উদ্যোক্তা জহির রায়হানের তিন শ কলাগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ১২ অক্টোবর, উজানচর, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী। ছবি: এম রাশেদুল হক
কলাচাষি ও উদ্যোক্তা জহির রায়হানের তিন শ কলাগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ১২ অক্টোবর, উজানচর, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী। ছবি: এম রাশেদুল হক

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচরে এক তরুণ উদ্যোক্তার বাগানের তিন শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জহির রায়হানের বাগানের কলা ধরা গাছগুলো দুর্বৃত্তরা কেটে ফেলে।

জহির উজানচর মজলিশপুর জয়নাল মৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তাঁর ভাষ্য, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এতে তাঁর অন্তত তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

জহির রায়হান বলেন, ২০১৫ সালে আবু বক্কর শেখ নামের এক ব্যক্তির মধ্যস্থতায় বছরে বিঘাপ্রতি আট হাজার টাকায় তিনি রমজান মাতুব্বর পাড়ার মেজেক প্রামাণিক ও হবি মোল্যার আট বিঘা জমিতে কলার বাগান করা শুরু করেন। এ ছাড়া অন্যদের থেকে জমি নিয়ে মোট ২০ বিঘা জমিতে তিনি কলার বাগান করেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মেজেকের চার বিঘা জমির বাগানের কলা ধরা প্রায় ৩০০ গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। সম্প্রতি বন্যায় তাঁর প্রায় ছয় লাখ টাকার পেঁপের বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় মোন্নাফ শেখ (৪৫) নামের এক ব্যক্তি হাজির হয়ে দাবি করেন, ‘এই জমি আমার। কিসের ভিত্তিতে মেজেক জমি আপনাদের দিয়েছে? আর এই জমিতে কোনো কিছু করবেন না। আমি অনেক আগে মেজেকের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়েছি।’ তবে এই গাছ কাটার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন।

আবু বক্কর বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি পরিচয় না দিয়ে আমাকে ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এ সময় পরিচিত এক ব্যক্তিকে ওই নম্বরটিতে কথা বলতে বলি। ফোন করা মাত্র তাঁকেও গালমন্দ করা হয়। পরদিন (বুধবার) দুপুরে শ্রমিকেরা বাগানের গাছ কেটে ফেলার খবর জানায়।’

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাগানের পশ্চিম দিকে বেশ কিছু গাছ মাঝামাঝি স্থান থেকে কাটা পড়ে আছে। এর মধ্যে অনেক গাছের কলা ও থোড় বের হয়ে আছে।

এ বিষয়ে মেজেক প্রামাণিকের ছেলে ইউসুফ প্রামাণিক দাবি করে বলেন, ‘মোন্নাফ ও তাঁর ভাইয়ের কাছ থেকে আমার বাবা প্রায় ২০-২২ বছর আগে জমি কিনে নিয়েছেন। মোন্নাফরা যদি জমি পেয়ে থাকে, তাহলে তাঁরা আমাদের কাছে আসতে পারতেন। আগে কখনো জমির কথা বলেননি, অথচ এখন দাবি করছেন।’

গোয়ালন্দঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজ দুপুরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।