আরও একটি নতুন পাখি

রাজশাহীতে ৫ মে দেখা গেল বাংলাদেশের আরও একটি নতুন পাখি। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব পাখিটির নাম দিয়েছে খয়রাটুপি বাটকুড়ালি l ছবি: হাসনাত রনী
রাজশাহীতে ৫ মে দেখা গেল বাংলাদেশের আরও একটি নতুন পাখি। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব পাখিটির নাম দিয়েছে খয়রাটুপি বাটকুড়ালি l ছবি: হাসনাত রনী

মুখ গোমড়া করা সকাল। রাজশাহী শহরের অদূরে একটি কড়ইগাছ। সবুজ পাতার পটভূমিতে চোখে পড়ল চঞ্চল একটি ছোট্ট পাখি। পোকা খুঁজছে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়। এরই মধ্যে হাসনাত রনীর ক্যামেরাবন্দী হয়ে গেল সে।
পরে তাঁর পাঠানো ছবি দেখে পাখি বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, বাংলাদেশে এটি নতুন পাখি। তাঁর এই আবিষ্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি নতুন পাখি পেল। আগে কেউ দেখেনি, তাই বাংলায় এই পাখির কোনো নাম ছিল না। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব পাখিটির নাম প্রস্তাব করেছে ‘খয়রাটুপি বাটকুড়ালি’।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্যরা সাইক্সের রাতচরা পাখিটিও রাজশাহীতে আবিষ্কার করেন।
পাখিপ্রেমী হাসনাত রনী বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের একজন সদস্য। গত শুক্রবারের (৫ মে) সেই সকালে তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক এ এম সালেহ রেজা। দুজনেই এমন পাখি আগে কখনো দেখেননি। সর্বশেষ ৮ মে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক তাঁদের নিশ্চিত করেন যে এটা নতুন পাখি।
পাখিটির নাম ‘ব্রাউন ক্যাপ্ড পিগমি উডপেকার’। ইন্ডিয়ান পিগমি উডপেকারও বলা হয়। পাখিটি ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার কোনো কোনো এলাকায় দেখা যায়। এই পাখিটির স্বাতন্ত্র্যসূচক গোলাপি রাঙা চোখ। চোখের তারাটা সাদা। শরীরের ওপরের অংশ অনেকটা ডোরাকাটা হলুদ ও সাদা। ঝুঁটিটা কিছুটা ম্লান বাদামি এবং চোখের পাতা সাদা চিবুক ও ঠোঁটের গোড়া থেকে আলাদা। সাদা স্পট রয়েছে লেজে।
ইনাম আল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মেটেটুপি বাটকুড়ালি আছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের কোথাও কোথাও দেখা যায়। কিন্তু “খয়রাটুপি বাটকুড়ালি” এর আগে বাংলাদেশে কেউ দেখেননি।’ তাঁরা পাখিটির বাংলা নাম প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের নামকরণের সূত্র সামনে রেখে তাঁরা পাখির বাংলা নামকরণ করে থাকেন। সেই সূত্র ধরেই এই পাখির নাম ‘খয়রাটুপি বাটকুড়ালি’ প্রস্তাব করা হয়েছে।
হাসনাত রনী বলেন, যাঁরা ওয়াইল্ডলাইফ নিয়ে কাজ করেন বা যাঁদের কিছুটা আগ্রহ আছে, তাঁরা জানেন একবিংশ শতাব্দীতে এসে একটা নতুন পাখি খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। যাঁরা পাখিটি চিনতে সহযোগিতা করেছেন, তিনি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।