জাতীয় পর্যায়ে শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট হচ্ছে

জাতীয় পর্যায়ে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট করার প্রস্তাবে নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এক হাজার শয্যার প্রস্তাবিত এই হাসপাতালের জন্য ইতিমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটির জন্য রাজধানীর পূর্বাচলে ৩০ একর জায়গা পাওয়ার চেষ্টা চলছে। সেখানে পাওয়া না গেলে অন্যত্র জায়গা দেখা হবে।
দেশে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের সংখ্যা অনেক। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় শুধু শিশুদের জন্য বিশেষায়িত কোনো হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট নেই। বর্তমানে শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল নামে যে হাসপাতাল রয়েছে, সেটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।
গত বছর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসদের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে শিশু হাসপাতাল করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস এবং অ্যাসোসিয়েশন অব পেডিয়াট্রিক সার্জনস অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে একটি শিশু হাসপাতাল করার জন্য প্রস্তাব করা হয়।
অ্যাসোসিয়েশন অব পেডিয়াট্রিক সার্জনস অব বাংলাদেশের সভাপতি এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু ইউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত শিশুদের চিকিৎসায় ঢাকা শিশু হাসপাতালের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এই হাসপাতালে বেডের সংখ্যা এবং সামগ্রিক চিকিৎসাব্যবস্থা শিশুদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। শুধু তা-ই নয়, দেশের সব কটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুদের জন্য যে চিকিৎসাব্যবস্থা আছে, তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। এই পটভূমিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে একটি সরকারি শিশু হাসপাতাল করার প্রস্তাব করা হয়। সেই প্রস্তাবে গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত এই প্রতিষ্ঠানের নাম হবে ‘ন্যাশনাল চিলড্রেন হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ’। গত ২৬ সেপ্টেম্বর এই হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক এবং অ্যাসোসিয়েশন অব পেডিয়াট্রিক সার্জনস অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আবদুল হানিফ। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় পর্যায়েও এ ধরনের হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে শিশু মেডিসিন থেকে শুরু করে সব বিভাগ থাকবে, যাতে এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শিশুরা সব ধরনের চিকিৎসা পেতে পারে। হাসপাতালে সেবার পাশাপাশি ইনস্টিটিউটে জনবল প্রশিক্ষণ দেওয়া ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।