রাতেই ঢাকা ছাড়ছেন প্রধান বিচারপতি

রাজধানীতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে আজ সন্ধ্যায় ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। ছবি: জাহিদুল করিম
রাজধানীতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে আজ সন্ধ্যায় ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। ছবি: জাহিদুল করিম

আজ শুক্রবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে স্ত্রী সুষমা সিনহার সঙ্গে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসে করে ঢাকা ছাড়ছেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে এ কথা জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের এসকিউ ৪৪৭ নম্বর ফ্লাইটে করে যাওয়ার কথা রয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতির বিমানবন্দরে আসতে পারেন। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় ভোর ছয়টার দিকে তিনি সিঙ্গাপুরে পৌঁছাবেন। সেখানে ঘণ্টা খানেক যাত্রাবিরতির পর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান বিচারপতি।

১ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটির কথা জানিয়ে চিঠি দেন। এখন তাঁর ছুটি নয় দিন বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর করা হয়েছে।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশিত হয়। ওই দিনই পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। রায় প্রকাশের পর এ নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলেন।

১৪ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিচারিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংসদে ওই দিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়, যাতে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে পাস হওয়া সংবিধানের সংশোধনী বাতিল করেছেন।

২৭ আগস্ট থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি ছিল।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ৩ জুলাই খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।