অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান বিচারপতি

অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। আজ রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে অভিবাসন পুলিশের কর্মকর্তারা।

এর আগে প্রধান বিচারপতি রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান। রাত ১০টার দিকে তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন ছেড়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। প্রধান বিচারপতির স্ত্রী সুষমা সিনহা তাঁর সঙ্গে বিমানবন্দরের যান। 

রাত দশটার দিকে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনের কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন ফটকের সামনে তাঁকে বহনকারী গাড়িটি পৌঁছার পর তিনি নিজেই গাড়ি থেকে নামেন। গাড়ির ভেতরে প্রধান বিচারপতির স্ত্রীকে দেখা গেছে। গাড়ি থেকে নামার পর প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক থেকে দুই মিনিট কথা বলেন। পরে গাড়িতে ওঠেন। এর পরপরই তাঁর গাড়ি প্রধান ফটক ছেড়ে যায়।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় ভোর ছয়টা দিকে প্রধান বিচারপতি সিঙ্গাপুরে পৌঁছাবেন। সেখানে ঘণ্টাখানেক যাত্রা বিরতির পর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান বিচারপতি।

গত পয়লা অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটির কথা জানিয়ে চিঠি দেন। এখন তাঁর ছুটি ৯ দিন বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর করা হয়েছে।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশিত হয়। ওই দিনই পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। রায় প্রকাশের পর এ নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলেন।

১৪ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিচারিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংসদে ওই দিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়, যাতে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে পাস হওয়া সংবিধানের সংশোধনী বাতিল করেছে।

২৭ আগস্ট থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি ছিল।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ৩ জুলাই খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।