স্ত্রী হত্যায় পুলিশ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড

গোপালগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মশিউর রহমানকে (৩৬) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বিকেলে গোপালগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. দলিল উদ্দিন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মশিউর রহমান গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর মানিকদহ গ্রামের মফিজুর রহমান ওরফে পাপার ছেলে। মশিউর পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন। স্ত্রী হত্যার অভিযোগ ওঠার পর পুলিশের চাকরি থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ বিভাগ।

এ মামলার অপর পাঁচজন আসামি মশিউর রহমানের বাবা মফিজুর রহমান পাপা, মা সেলিনা বেগম ওরফে শেলী, বোন মাহফুজা বেগম, ভগ্নিপতি ইব্রাহিম মোল্লা ও ভাবি শাম্মী ইয়াসমিন ওরফে সোমাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২২ নভেম্বর মশিউর রহমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া গ্রামের নেছার উদ্দিন মোল্লার মেয়ে সাদিয়া জাহান ওরফে তুলি বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তুলির কাছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বাবার বাড়ি থেকে তুলি ৫০ হাজার টাকা এনে দেন। আরও এক লাখ টাকার জন্য তুলির ওপর নির্যাতন চলতে থাকে। অত্যাচার, নির্যাতন সইতে না পেরে তুলি ২০০৫ সালের নভেম্বরের প্রথম দিকে বাবার বাড়ি চলে যান। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন গিয়ে তাঁকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। ২৭ নভেম্বর স্বামী ও তাঁর বাড়ির লোকজন তুলিকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

এ ঘটনার পরদিন ২৮ নভেম্বর তুলির বাবা নেছার উদ্দিন মোল্লা বাদী হয়ে মশিউর রহমান, তাঁর বাবা মফিজুর রহমান, মা সেলিনা, বোন মাহফুজা বেগম ও ভগ্নিপতি ইব্রাহিমকে আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হুমায়ুন কবির দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ১৬ এপ্রিল প্রধান আসামি মশিউর রহমানের ভাবি শাম্মী আক্তার সোমাকে এ মামলায় যুক্ত করে মোট ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে গোপালগঞ্জ আদালতে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়।

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন গোলাম মেহেদি খান। তিনি বলেন, তাঁরা এ রায়ে ক্ষুব্ধ। শাস্তি পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতে আপিল করা হবে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি আবদুল হালিম বলেন, প্রধান আসামির সাজা হওয়ায় তাঁরা খুশি। তবে বাকি আসামিরা খালাস পাওয়ায় তাঁরা হতাশ হয়েছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।