কথিত গণপিটুনিতে নিহত যুবক ছিলেন হত্যা মামলার সাক্ষী

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ভাষা গকুলনগর গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে কথিত গণপিটুনির ঘটনায় নিহত যুবক রফিকুল ইসলাম (২৮) একটি হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ওই মামলার বাদী মোনায়েম মিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নাউরি গ্রামে জানাজা শেষে রফিকুলের লাশ দাফন করা হয়েছে। পরে বাড়ির আঙিনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রফিকুলের চাচা আবুল হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর মৎস্য খামারে কাজ করার সময় রফিকুলকে ধরে নিয়ে যায় তাঁদের প্রতিপক্ষ ইউপি সদস্য কলিমুদ্দিনের লোকজন। পরদিন রফিকুলের লাশ একটি বিলে পড়ে থাকার খবর পান তাঁরা।

নিহত রফিকুলের আরেক চাচা মোনায়েম মিয়া বলেন, তাঁর বড় ভাই সবুজ মিয়া গত ২১ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে ফুলবাড়িয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের একটি সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি স্যুটকেসের ভেতরে সবুজ মিয়ার লাশ পাওয়া যায়। লাশের মুখ বিকৃত থাকায় প্রথমে পরিচয় অজ্ঞাত থাকে। পরে তাঁরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। পরে অবশ্য দুটি পক্ষ ওই লাশের দাবিদার হওয়ায় পুলিশ কাউকে না দিয়ে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে লাশটি দিয়ে দেয়।

মোনায়েম আরও বলেন, এ ঘটনায় তিনি আদালতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ৯ নম্বর সাক্ষী ছিলেন রফিকুল। তিনি আরও বলেন, রফিকুল শুধু সাক্ষীই ছিলেন না, মামলার তদবিরও করতেন তিনি। তাই হত্যা মামলার আসামিরা তাঁর ভাতিজাকে হত্যা করে গণপিটুনির কথা বলা হচ্ছে।

মোনায়েম বলেন, গণপিটুনির ঘটনা ঘটে থাকলে আশপাশে পাকা ধানখেত নষ্ট হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া মরদেহের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা ছিল। কিন্তু লাশের গলায় কেবল ফাঁস দাগ ছিল।

নিহত রফিকুলের মা রাজিয়া বেগম অভিযোগ করেন, ‘আমার স্বামী প্রবাসী, আমার ছেলেও বিদেশফেরত। সে বাজারের ইজারাদার ও পশুর চামড়ার ব্যবসা করে। আমার ধনসম্পদও কম নয়। আমার ছেলে কী কারণে গরু চুরি করতে যাবে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’

রফিকুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে কলিমুদ্দিন বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ রয়েছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে তা সতি৵ না।