নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই ১০ ভেলা

ভেলায় এভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গারা। ৮ নভেম্বর, টেকনাফ। ছবি: প্রথম আলো।
ভেলায় এভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গারা। ৮ নভেম্বর, টেকনাফ। ছবি: প্রথম আলো।

টেকনাফের নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই ১০টি ভেলা ভাসছে। আজ সকাল ৮টা থেকে এ ১০টি ভেলা ভাসতে দেখা যায়। প্রতিটি ভেলায় নারী-পুরুষ শিশুসহ ৪০ থেকে ৬০ রোহিঙ্গা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফট্যান্টেট কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম।

আরিফুল ইসলাম বলেন, আজ শুক্রবার সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের ১০টি ভেলা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জারিয়াপাড়ার উল্টোপাশে মিয়ানমারের জলসীমানায় অবস্থান করছে। এপার থেকে ভেলাগুলোর চারপাশে সে দেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার দুটি স্পিডবোড টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নৌকা সংকটের কারণে প্লাস্টিকের জারিকেন, কাঠের তক্তা, বাঁশ ও দড়ি দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ভেলা দিয়ে বাংলাদেশে আসছে। গত বুধবার একটি ভেলায় ৫২ জন, গতকাল বৃহস্পতিবার তিনটি ভেলায় ১৮০ জনসহ ভেলায় করে ২৩২ জন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।

ভেলায় এভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গারা। ৮ নভেম্বর, টেকনাফ। ছবি: প্রথম আলো।
ভেলায় এভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গারা। ৮ নভেম্বর, টেকনাফ। ছবি: প্রথম আলো।

আরিফুল ইসলাম বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোহিঙ্গারা এভাবে আসায় যেকোনো সময় ভেলা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। একই সঙ্গে তারা মিয়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশে চলে এলেই মানবিক সহায়তার কথা চিন্তা করে বিজিবি তাদের উদ্ধার করে একটি স্থানে জড়ো করে। খাদ্য ও মানবিক সহায়তা দিয়ে তাদের রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখন ইয়াবা, অস্ত্রসহ, মাদক পাচার হয়ে আসায় তাদের তল্লাশি করে তাদের জন্য স্থাপিত ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে।

শাহ পরীর দ্বীপের বাসিন্দা ও ছাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ইউপি সদস্য ফজল হক বলেন, রোহিঙ্গারা নৌকা সংকটের পর এখন প্রতিদিন ভেলায় করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কারণ গত কয়েক দিনে মিয়ানমারে কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাংলাদেশে স্থাপিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার খবরটি ওই পারে পৌঁছানোর পর রোহিঙ্গারা আবারও দলে দলে অনুপ্রবেশ করছে।

ভেলায় এভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গারা। ৮ নভেম্বর, টেকনাফ। ছবি: প্রথম আলো।
ভেলায় এভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গারা। ৮ নভেম্বর, টেকনাফ। ছবি: প্রথম আলো।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ২৯ আগস্টের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রোহিঙ্গা পারাপারের নৌকা, নৌকার মালিক, মাঝি ও দালালকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৪৫২ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এরপর নৌকা সংকট দেখা দিলে রোহিঙ্গারা ভেলা করে আসতে শুরু করেছেন। আবার কিছু কিছু নৌকা রাতের আঁধারে রোহিঙ্গা নিয়ে আসছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।