'এরা আবার মন্ত্রী-মিনিস্টার হবে'

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন হাওলাদার (২২) ছয় নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের অপরাধ দমনে কী ধরনের সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়, সে ব্যাপারে পাঠকের মন্তব্য চাওয়া হয় প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে। খুব অল্পসময়ের মধ্যেই প্রচুর পাঠক পোস্টটিতে তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন।

তাসনিম হোসেইন তনয় হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘এরা আবার ভবিষ্যতের বড় নেতা মন্ত্রী-মিনিস্টার হবে। দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।’

মো. ফারুক চৌধুরী বেশ আক্ষেপ করে এ ঘটনার বিপরীতে ছাত্রলীগের পরবর্তী পদক্ষেপ অনুমান করে লিখেছেন, ‘বহিষ্কার করে বলবে, ছাত্রলীগের কেউ না। খুঁজে বের করবে...বাপ, দাদা, নানা, মামা, চাচা, খালু কেউ বিএনপি–জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না। ছাত্রলীগ খারাপ কাজ করতেই পারে না।’

জোবায়ের শাকিলের মতে, সুষ্ঠু বিচার, সচেতনতা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা কমাতে। শুধু দল থেকে বহিষ্কার করা এর সমাধান নয়। বরং দলই যেন তাকে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারে সহযোগিতা করে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

আরিফ হোসেনকে খারাপ মানুষ আখ্যা দিয়ে শাকিল আহমেদ বলেছেন, এখানে তাঁর ছাত্রলীগ পরিচয়টাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া ঠিক হয়নি।

শারমিন ওয়াহিদ নিঝুম ও মো. ইসমাইলের মতে, এ ধরনের অপরাধ ঠেকাতে সামাজিক প্রতিরোধের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধও দরকার।

আব্দুর রাজ্জাক, মো. সোহানের মতে, যেখানে বিশ্বজিতের হত্যাকারীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে, সেখানে এ ধরনের সাইবার ক্রাইমের বিচার কতটা বাস্তবসম্মত, সে বিষয়ে তিনি সন্দিহান। জাহিদুল ইসলাম, ওবায়দুর রহমানও একই ধরনের হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

আর. কে রিমন বেশ বিশ্লেষণধর্মী মত দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘প্রথমত, যারা এইসব কাজ করে, তারা করার সময় ভয় পায় না। কারণ তারা জানে, তাদের বাঁচানোর জন্য লোক আছে। আর অনেকে আছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব কাজ করে। তাই প্রথমে যারা এসব লোকদের বাঁচায়, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আর কাউকে দলীয় পদ দেওয়ার আগে তাঁদের চারিত্রিক গুণাগুণ দেখে পদ দেওয়া উচিত।’

জাহিদুল ইসলাম টিটুর মতে, সাইবার অপরাধের যে শাস্তি আছে, সেটার যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন।

মো. হাসানের মতে, ‘ধর্মীয় মূল্যবোধকে সামাজিকভাবে গুরুত্ব দেওয়া ও অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করলেই হবে এর সর্বোত্তম প্রতিকার।’

অতীতের ধর্ষণের ঘটনাগুলোর দ্রুত বিচার ও দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত সাজা দিলে, এ ধরনের ঘটনার পরিমাণ কমে যেত বলে মন্তব্য করেছেন নিলয় নীলের মতো অনেকেই।

সাইফুল্লাহ আমানের মতে, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ব্যক্তি নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

নীল চিরকুট ও আজিজুর রহমান রিপন নিজেদের ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে লিখেছেন, তাঁদের কিছুই করার নেই। অদ্রিকা অনুপমা আরিফ হোসেইনকে প্রকৃত ছাত্রলীগ বলতে নারাজ। তাঁরা তাকে নামধারী ছাত্রলীগ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

ইব্রাহিম খান, রেজা পারভেজের মতো বেশির ভাগ পাঠকই যা বলতে চেয়েছেন তা হলো, বিচারহীনতার কারণেই দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে এবং বাড়ছে।