বনের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে রামপাল নিয়ে বিক্ষোভ

জার্মানির বন শহরে জাতিসংঘ ক্যাম্পাস এলাকায় বাংলাদেশের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ছবি: সরাফ আহমেদ
জার্মানির বন শহরে জাতিসংঘ ক্যাম্পাস এলাকায় বাংলাদেশের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ছবি: সরাফ আহমেদ

জার্মানির বন শহরে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন চলাকালে জাতিসংঘ ক্যাম্পাস এলাকায় বাংলাদেশে সুন্দরবনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে দেশটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ও নতুন নতুন উদ্যোগ বন্ধের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ভয়াবহ ক্ষতি হবে জেনেও, সরকার জনগণের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিচ্ছে।

স্টুডগার্ট হোয়েনহেইম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে স্নাতকোত্তর করছেন রাশা বিনতে মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলে জীব বৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে। স্থানীয় জনসাধারণের জীবন-জীবিকা হুমকির মধ্যে পড়বে। বিষয়টি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে। এখন আমরা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনেও বলছি কারণ বাংলাদেশে জলবায়ুবিষয়ক বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এসব চুক্তির বরখেলাপ। আমরা আন্তর্জাতিক মহলের কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরতে চাই।’

জার্মানির বার্লিনে কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার দ্রুত বন্ধের দাবিতে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীনপিসের কর্মীদের কয়লা ঢেলে দিয়ে প্রতিবাদ। ছবি: সরাফ আহমেদ
জার্মানির বার্লিনে কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার দ্রুত বন্ধের দাবিতে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীনপিসের কর্মীদের কয়লা ঢেলে দিয়ে প্রতিবাদ। ছবি: সরাফ আহমেদ

এদিকে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রতিনিধিদের মধ্য যখন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে আলোচনা চলছে তখন হাজারো পরিবেশবাদী বিক্ষোভের জন্য বনে পৌঁছেছেন। ইউরোপের নানা দেশ থেকে আসা এই সব পরিবেশবাদীরা আজ শনিবার সকালে বন শহরের কেন্দ্রস্থল কাইজার স্কয়ার ও মুনস্টার স্কয়ার থেকে দুটি বিক্ষোভ ও সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা আয়োজক দেশ জার্মানিসহ অন্যত্র কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং আহরণের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

বিক্ষোভের আয়োজনকারীরা বলছেন, ইউরোপসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোর গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণর কারণে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ হুমকির মুখ পড়ছে। তাদের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত হচ্ছে। তাই অবিলম্বে এর সমাধান প্রয়োজন।

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন অন্য দেশের পরিবেশবাদীরা। ছবি: সরাফ আহমেদ
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন অন্য দেশের পরিবেশবাদীরা। ছবি: সরাফ আহমেদ

বনের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন চলাকালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিবেশবিষয়ক কমিশনার মিগুয়েল আরিয়াস কানাটে বলেছেন, সদস্য দেশগুলো মোটরযান থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকারক কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ২০২৫ সালের মধ্য ১৫ শতাংশ ও ২০৩০ সালের মধ্য ৩০ শতাংশ হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ভবিষ্যতে নতুন মোটরযান প্রস্তুতকারী ও বিক্রেতাদের ক্ষতিকারক কার্বন ডাই-অক্সাইড হ্রাসের লক্ষ্যে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।

শুক্রবার বনে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন আমেরিকার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত আল গোর ও মহাকাশচারী পরিবেশবিদ টমাস পেসকুঁয়ে।