শীর্ষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় নর্থ সাউথ

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর বাংলা ট্রিবিউন-ঢাকা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে র‌্যাঙ্কিং নির্ণয়বিষয়ক এক গবেষণায় প্রথম হয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে অবস্থান করছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ।

গতকাল শুক্রবার এই জরিপের ফলাফল বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সংখ্যা, গবেষণা, ক্যাম্পাস, শিক্ষা কার্যক্রম, লাইব্রেরির অবস্থা, পাস করা শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে শিক্ষক ও চাকরিদাতাদের ভাবনার ভিত্তিতে এই র‌্যাঙ্কিং হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ওআরজি কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড।

এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ধারণাগত ও বস্তুগত মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই র‍্যাঙ্কিং করা হয়েছে। এটা শতভাগ নির্ভুল—এমনটি দাবি করব না। তবে ভুল কম হয়েছে, এটা বলা যায়।’

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মনে করেন, একটা নতুন উদ্যোগ শুরু হলো। এর ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হবে, যা উচ্চশিক্ষায় প্রভাব ফেলবে। তাঁর মতে, র‍্যাঙ্কিং অব্যাহত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর ভালো করার চাপ থাকবে।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, এ বছর র‍্যাঙ্কিংয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। এরপরে পঞ্চম স্থানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ষষ্ঠ স্থানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, সপ্তম স্থানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, অষ্টম স্থানে দ্য ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, নবম স্থানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং দশম স্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

গবেষণার আয়োজকেরা জানান, বস্তুগত ও ধারণাগত (ফ্যাকচুয়াল ও পারসেপচুয়াল) তথ্য থেকে প্রাপ্ত স্কোরের সমন্বয়ে চূড়ান্ত র‍্যাঙ্কিং করা হয়। যার মধ্যে বস্তুগত তথ্য থেকে ৪০% এবং ধারণাগত তথ্য থেকে ৬০% স্কোর নিয়ে মোট ১০০ স্কোরের মধ্যে ইউনিভার্সিটিগুলোর র‍্যাঙ্কিং নির্ধারণ করা হয়েছে। বস্তুগত তথ্যের ক্ষেত্রে ইউজিসি থেকে প্রাপ্ত ২০১৪ সালের তথ্য নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ধারণাগত তথ্যের ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটির শিক্ষাবিদ (ডিন, বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপক, রেজিস্ট্রার) এবং চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের ওপর জরিপ পরিচালিত হয়।

ধারণাগত জরিপটি মোট ৩০০ জনের ওপর পরিচালনা করা হয়েছে যার মধ্যে ১৫০ জন শিক্ষাবিদ এবং ১৫০ জন মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক।

গবেষণায় দেখা যায়, বস্তুগত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, তবে ধারণাগত তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে রয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। তবে দুটির সমন্বয়ে নর্থ সাউথকে পেছনে ফেলে র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।

বাংলাদেশের ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ৩২টি বাছাই করে নেওয়া হয়। তার মধ্যে থেকেই গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে সেরা ২০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং তৈরিতে এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে একটি উপদেষ্টা কমিটির তত্ত্বাবধানে। কমিটির সদস্যদের মধ্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ওআরজি কোয়েস্টের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুরুল হক, বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।