মেয়র আনিসুল হক যেভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন, তা ছিল একই সঙ্গে আকস্মিক ও আকর্ষণীয়। নির্বাচনের আগে রীতিমতো গবেষণার মাধ্যমে তিনি যেভাবে ঢাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছিলেন, তাতে তাঁর আধুনিক মানসিকতার পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল।
দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই আনিসুল হক উদ্যমের সঙ্গে কাজ করেছেন। এই উদ্যমে কখনো ভাটা পড়তে দেখা যায়নি। শহরের বিলবোর্ডগুলো দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে সরিয়ে ফেলা তাঁর একটি বড় সফলতা। এ কাজটি তিনি যেভাবে এই খাতের ব্যবসায়ী, ভবনমালিক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করেছিলেন, তাতে তাঁর জনবান্ধব চরিত্রের পরিচয় পাওয়া যায়। একইভাবে তিনি গাবতলী ও তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকাকে অবৈধ পার্কিংমুক্ত করতে পেরেছিলেন।
আনিসুল হক আওয়ামী লীগের সমর্থনে নির্বাচিত হলেও ওই দলের লোকজনের ওপর খুব বেশি ভরসা করতে পেরেছিলেন, এমন নয়। বরং দলের লোকদের বিরুদ্ধে গিয়েও তিনি অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়নও করেছেন। নগর ভবনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নিতে পেরেছিলেন।
আনিসুল হক রাজনীতির লোক ছিলেন না। কিন্তু নগর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে কুশলতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রয়োজন, তা তিনি অর্জন করছিলেন দ্রুততার সঙ্গে। শহরের বাস্তুপরিবেশ কীভাবে উন্নত করা যায়, সে ব্যাপারেও তিনি সচেতন ছিলেন। মাত্র আড়াই বছরে ঢাকার মতো একটা সমস্যাসংকুল শহরের জন্য তিনি যতটুকু করতে পেরেছেন, সেটা একটা উদাহরণ।
আনিসুল হকের সমাপ্ত কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঙ্গে একটা চমৎকার যোগসূত্র ছিল। সেটা বজায় থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নগর-পরিকল্পনাবিদ