প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে মেয়াদ শেষ!

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম

সিটি করপোরেশন চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের লালচাঁন্দ সড়ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় ২০১০ সালে। তখন মেয়র ছিলেন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল প্রকল্পটি অনুমোদন পায় মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের আমলে। ওই সময় প্রকল্পের কাজ শেষ করার মেয়াদ ধরা হয় ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর ২০১৫ সালে এক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়ান। মেয়াদ নির্ধারণ করেন ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। সেই মেয়াদ শেষে প্রায় দেড় বছর পার হলেও প্রকল্পটির কাজ শুরুই হয়নি।

প্রকল্পটি আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন করপোরেশনের প্রকৌশলীরা। এখন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে আছে সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত দুটি কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। এর একটি হচ্ছে মন্ত্রণালয় থেকে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়া এবং অন্যটি সময় মতো প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন না হওয়া। 

বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য যে টাকার প্রয়োজন তা জেলা প্রশাসনকে জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে তারা জমি বুঝিয়ে দিতে পারেনি। তাই সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নকাজ শুরু করা যায়নি। মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা জানতে চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের শুরু গুলজার মোড় থেকে। শেষ হয়েছে চকবাজার কাঁচাবাজার মোড়ে।  প্রায় ২০ ফুটের সড়কটি দিয়ে চলাচল করছে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সরু সড়কটি দিয়ে এসব গাড়ি চলাচলেই হিমশিম অবস্থা হচ্ছে। অনেক মানুষের চলাচল সড়কে।

সড়কের পাশের দোকানিরা বলেন,  এই সড়কে চকবাজার থানা ভবন। প্রতিদিন থানায় নানা কাজে লোকজন আসেন। তা ছাড়া কলেজ সড়ক ও সিরাজদ্দৌলা সড়কের সংযোগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে সড়কটি। ফলে সব সময়ই মানুষের চলাচল বেশি।

সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার (ডিপিপি) তথ্য অনুযায়ী, চকবাজারের গুলজার থেকে কাঁচাবাজার মোড় পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের সড়কটি সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নগরের যানজট নিরসনে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। সড়কের প্রশস্ততা ২০ ফুট থেকে ৪০ ফুটে উন্নীত করার কথা ছিল। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল হতে ১৯ কোটি ৭১ লাখ এবং সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় করবে। তবে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যায় ১৭ কোটি টাকা।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের জন্য ৭০ শতক জমি অধিগ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল। এই ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ভবনের ক্ষতিপূরণ ৫ কোটি ২৯ লাখ, সড়ক নির্মাণে ২ কোটি ৫০ লাখ, নালা নির্মাণে ৯৫ লাখ এবং ফুটপাত নির্মাণে ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, জমি বুঝে পেলে প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই।