ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেল শীতলপাটি

শীতলপাটি
শীতলপাটি

বাংলার শীতলপাটি এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় শীতলপাটিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো। এর আগে জামদানি, বাউলগান ও মঙ্গল শোভাযাত্রাও এই স্বীকৃতি পায়।

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে ইউনেসকোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ (আইসিএইচ) কমিটির ১২তম অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে যোগ দেয় সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল। জাতীয় জাদুঘরের সচিব শওকত নবীর নেতৃত্বে এই দলে আছেন সিলেটের দুজন প্রসিদ্ধ শীতলপাটিশিল্পী গীতেশ চন্দ্র দাশ ও হরেন্দ্র কুমার দাশ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর তাঁরা মঞ্চে একটি শীতলপাটি প্রদর্শন করেন।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, এখন দায়িত্ব বেড়ে গেল। এ শিল্পের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরা সংকটের মধ্যে আছেন। কেননা গ্রামীণ কারুশিল্প এখন সাধারণ মানুষের ব্যবহারের আয়ত্তের মধ্যে নেই, শৌখিন পণ্যের পর্যায়ে চলে গেছে। শীতলপাটি যেন আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে সরকার পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার কথা ভাবছে।

এই লোকশিল্পটি মুর্তা নামে একধরনের ঝোপজাতীয় গাছের বেত থেকে বিশেষ বুননকৌশলে তৈরি একধরনের মাদুর। সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরিশাল, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, ঢাকা, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনায় এ গাছ প্রচুর পাওয়া গেলেও শীতলপাটির বুননশিল্পের বেশির ভাগ বৃহত্তর সিলেটের চারটি জেলার (সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ) নিচু এলাকায় সক্রিয়। এখানে বুননশিল্পীরা বংশপরম্পরায় পাটির বুননকৌশল আয়ত্ত করেছেন। শীতলপাটির বুননশিল্পীরা পাটিয়াল বা পাটিকর নামে পরিচিত।