রেণুকা এখন কী করবেন

প্রতিকী ছবি
প্রতিকী ছবি

রেণুকা বেগম একজন গরিব গৃহিণী। তাঁর চাষযোগ্য ১৫ শতক জমি আছে। চার বছর আগে মেয়ের বিয়ের সময় সেই জমি বন্ধক রাখেন। জমিটি ছাড়িয়ে আনতে একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কাছ থেকে চেকের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিন্তু সোনালী ব্যাংকে গেলে এক প্রতারক কৌশলে চেকটি নিয়ে যান এবং টাকা উঠিয়ে চম্পট দেন। প্রতিকার চাইতে রেণুকা গেছেন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে। থানা-পুলিশ করেছেন। না তাঁর টাকা উদ্ধার হলো, না ধরা পড়ল সেই প্রতারক। রেণুকার মাথায় চাপল নতুন ঋণের বোঝা। তিনি এখন কী করবেন?

রেণুকা বেগমের (৪২) বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামে। তাঁর স্বামী আলতাফ হোসেন বিদ্যুৎমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁদের ছেলে স্মরণ পারভেজ কলেজে পড়াশোনা করে। আলতাফের সামান্য আয়ে কষ্টেসৃষ্টে সংসার চলে।

রেণুকা প্রথম আলোকে বলেন, চার বছর আগে বড় মেয়ে সান্ত্বনা খাতুনকে বিয়ে দেন। ওই সময় বেশ কিছু টাকা খরচ করতে হয়েছে। তখন তাঁদের চাষযোগ্য ১৫ শতক জমি ৬০ হাজার টাকায় বন্ধক রাখতে হয়। স্বামী-স্ত্রী মিলে সিদ্ধান্ত নেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জমিটি ছাড়িয়ে আনবেন। পরে কিস্তিতে এনজিওর ঋণ শোধ করবেন। তিনি গত ২০ নভেম্বর শিশু নিলয় ফাউন্ডেশনের স্থানীয় এলাঙ্গী শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সংস্থাটি তাঁকে চেক দেয়। ওই দিনই তিনি কোটচাঁদপুর শহরের সোনালী ব্যাংকের শাখায় টাকা তুলতে যান। ব্যাংকে তখন অনেক ভিড় ছিল। তিনি চেকটি হাতে নিয়ে এক কর্মকর্তার টেবিলের কাছে যান। সেখানে বসে থাকা এক ব্যক্তি শিশু নিলয় ফাউন্ডেশনের চেক টাকা করাতে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের স্বাক্ষর লাগবে বলে তাঁর হাত থেকে চেকটি নেন। ওই ব্যক্তি শাখা ব্যবস্থাপকের কক্ষের দিকে এগিয়ে যান। এরপর তাঁর আর কোনো সন্ধান পাননি। পরে জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি টাকা উঠিয়ে নিয়ে চলে গেছেন। তিনি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি অবহিত করেন। কোটচাঁদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের সিসিটিভির ফুটেজে এক ব্যক্তি টাকা উত্তোলন করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তাঁকে চেনা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সিসিটিভির ক্যামেরার স্বল্পতা থাকায় দূর থেকে ধারণকৃত ছবিতে লোকটিকে ভালোমতো চেনা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই করতে পারছেন না।

তদন্ত কর্মকর্তা কোটচাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টি তদন্ত করছেন। প্রতারককে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে।