পুলিশ প্রতিবেদনে নারাজি দেবেন ফরহাদ মজহারের স্ত্রী

ফরহাদ মজহার। প্রথম আলো ফাইল ছবি
ফরহাদ মজহার। প্রথম আলো ফাইল ছবি

কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার অপহরণ মামলায় পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেবেন ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার। আজ বৃহস্পতিবার ফরিদা আক্তার আদালতে হাজির হয়ে নারাজি আবেদন দিতে সময় চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেজবাহ।

জয়নাল আবেদিন মেজবাহ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের এ প্রতিবেদনে ফরহাদ মজহার ও তাঁর স্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন।

ফরিদা আখতারের আবেদনের ওপর আগামী ৯ জানুয়ারি শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন ঢাকার মহানগর হাকিম খুরশিদ আলম। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন ফকির।

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর ফরহাদ মজহার অপহরণ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে ভুক্তভোগী ফরহাদ মজহার ও মামলার বাদী তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করার অভিযোগ আনে পুলিশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, অপহরণ অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ। আদালতে আজ এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল।

আদালত সূত্র জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি ঢাকার মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেন। এতে বলা হয়েছে, ফরহাদ মজহার অপহরণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করায় দণ্ডবিধির ২১১ ও ১০৯ ধারায় মামলার বাদী ও ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার এবং ভুক্তভোগী ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন দাখিলের আবেদন করা হয়।

ফরহাদ মজহারের পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, গত ৩ জুলাই ভোর পাঁচটার দিকে শ্যামলীর হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার। ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ভোর ৫টা ৫ মিনিটে ফরহাদ মজহার খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামেন। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফরহাদ মজহার স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ফোন করে বলেন, ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ এ ঘটনায় রাজধানীর আদাবর থানায় ফরহাদ মজহারের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন।

সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের অভয়নগর এলাকায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর প্রথমে ফরহাদ মজহারকে খুলনায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে সকাল পৌনে ৯টার দিকে তাঁকে ঢাকার আদাবর থানায় আনা হয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে, সেখান থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভিকটিম হিসেবে সেদিন তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে নিজের জিম্মায় দেন আদালত।