সাংবাদিকদের অবদান কেউ না বুঝলে তা দুঃখজনক

রাজধানীর টিআইবির মাইডাস সেন্টার আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরো​ধী দিবস উপলক্ষে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্তরা। ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর টিআইবির মাইডাস সেন্টার আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরো​ধী দিবস উপলক্ষে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্তরা। ছবি: প্রথম আলো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেছেন, দেশের জন্য সাংবাদিকদের অবদান যদি কেউ না বোঝে, তাহলে তা হবে দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন, আর দুর্নীতি থাকলে দারিদ্র্য বিমোচন হবে না। তাই সরকার জোরালো, সাহসী ও সৎ সাংবাদিকতা চায়।

দুর্নীতিবিরোধী দিবসকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন গওহর রিজভী। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কে সংস্থাটির নিজস্ব কার্যালয়ে এদিন অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি একটি সংলাপেরও আয়োজন করা হয়।

আলোচনায় গণমাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ উঠে এলে জবাবে গওহর রিজভী বলেন, ‘আমার কোনো সহকর্মীকে সাংবাদিকদের কাজে হস্তক্ষেপের জন্য বলা হয় না। কোনো ব্যক্তি ও এজেন্সি যদি তা করে থাকে, তাহলে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত, শ্রেণি ও গোষ্ঠীগত স্বার্থে তা করে থাকে। এর সঙ্গে পুরো সরকারের কোনো সম্পর্ক নাই।’

অনুষ্ঠানে প্রিন্ট মিডিয়ার জাতীয় ক্যাটাগরিতে প্রথম আলোর প্রতিবেদক অরূপ রায় ও স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে দৈনিক পূর্বাঞ্চল-এর প্রতিবেদক সাংবাদিক এইচ এম আলাউদ্দিন পুরস্কার পান।

টেলিভিশন সাংবাদিকদের মধ্যে মাছরাঙা টেলিভিশনের মো. বদরুদ্দোজা বাবু ও মেহেদি হাসান সোহাগ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সবুজ মাহমুদ, রকিবুল হাসান ও গোলাম কিবরিয়া এবং যমুনা টিভির মো. জাহিদ মামুর ইসলাম সাদ ও তানভির মিজান এবার সেরা সাংবাদিকের পুরস্কার পান।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করা হবে বলে সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে সংলাপে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংবিধানের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারসংক্রান্ত অনুচ্ছেদ এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন প্রণয়ন করা সরকারের উচিত নয়।

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, ব্যবসার ঝুঁকির কথা চিন্তা করে গণমাধ্যম-মালিকেরা অনেক সময় সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চান না।

সংলাপে আলোচক ও সাংবাদিকেরা বলেন, অসাধু কিছু ব্যক্তির অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সার্বিকভাবে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের ভেতরে দুর্নীতিগ্রস্ত ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয়দানকারীদের চিহ্নিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক জাফর ইকবাল, মঈদুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান, আতিকুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, জিআইজেডের কনসালট্যান্ট রিচার্ডস মাইলস, জেরি ওজবোর্ন, কৃষ্ণা চন্দ, মো. আলী রেজা প্রমুখ।

‘দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা’-বিষয়ক সংলাপে বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার ওপর অনুষ্ঠিত সংলাপে বক্তব্য দেন দৈনিক সমকাল-এর নির্বাহী সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাভিশনের বার্তা সম্পাদক শারমীন রিনভী এবং দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ইফতেখার মাহমুদ।

পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিকদের এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ এবং প্রত্যেক ভিডিও চিত্রগ্রাহককে ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।