যৌতুকের জন্য ২ নারীকে হত্যা

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় যৌতুক না পেয়ে সুলতা রানী হাওলাদার (১৮) নামের এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার বিনাপানি বাজার এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে, সাতক্ষীরার তালায় যৌতুকের দাবিতে লক্ষ্মী রানী দাস (২৫) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন গৃহবধূর স্বামীসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তেরছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সুলতা কাঁঠালিয়া উপজেলার বিনাপানি বাজার এলাকার পরেশ চন্দ্র বালির ছেলে শিপন বালির স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি বেতাগী উপজেলার জোয়ার করুণা গ্রামে। কাঁঠালিয়া উপজেলার একটি বিদ্যালয় থেকে এবার সুলতার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।

সুলতার বাবা বিমল চন্দ্র হালদার বলেন, এক বছর আগে সুলতা ও শিপনের বিয়ে হয়। বুধবার রাতে শিপন তাঁর শাশুড়ির কাছে মুঠোফোনে যৌতুক হিসেবে দেড় লাখ টাকার জন্য চাপ দেন। বিষয়টি নিয়ে শিপন ও সুলতার মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শিপন শ্বাসরোধে সুলতাকে হত্যা করেন। পরে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার কথা বলেন।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে শিপন বালি বলেন, ‘আমার স্ত্রী পারিবারিক কলহের কারণে অভিমানে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে।’

কাঁঠালিয়া থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কাঁঠালিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

নিহত লক্ষ্মী রানী দাস তালা উপজেলার তেরছি গ্রামের বিপুল চন্দ্র দাসের স্ত্রী এবং কেশবপুর উপজেলার অসীম কুমার দাসের মেয়ে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহত গৃহবধূর শাশুড়িসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

লক্ষ্মী রানী দাসের দাদু গোরা চাঁদ বসু জানান, বিপুল যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই তাঁর নাতনিকে নির্যাতন করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাতে বিপুল, তাঁর বড় ভাই, বড় ভাইয়ের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা লক্ষ্মী রানী দাসকে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে প্রচার করেন, তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। লোকমুখে খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে গিয়ে তাঁরা দেখেন, লক্ষ্মী রানীকে বারান্দায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। তাঁর শরীরের হাঁটু, গলা, মাথা, নাকসহ বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে থেঁতলানো ও রক্ত ছড়িয়ে পড়েছে। পরে খবর দিলে পুলিশ গতকাল সকালে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

এ ঘটনায় লক্ষ্মী রানীর পরিবার একটি হত্যা মামলা করেছে। পুলিশ লক্ষ্মী রানীর শাশুড়ি করুণাবালা দাস ও জা জ্যোৎস্না দাসকে গ্রেপ্তার করেছে।