সেতু আছে, সড়ক নেই

বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নে বারমাটিলা এলাকায় সেতুটির নির্মাণকাজ হয় চার বছর আগে। এতে ব্যয় হয় প্রায় ২৯ লাখ টাকা। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কোনো কাজে আসছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটি ঝোপঝাড়ে ঢাকা পড়েছে। হেঁটেও কোনো লোকজন যাতায়াত করছেন না সেতু দিয়ে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সারোয়াতলী ইউনিয়নের মানুষ দূরছড়ি বাজারে আসা-যাওয়া করতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে গ্রামীণ সেতু নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় ২০১০-১১ অর্থবছরে উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়নে বাঘাইছড়ি ছড়া, বাঘাইছড়ি ইউনিয়নে জীবতলী ছড়া, সাজেক ইউনিয়নে ভাইবা ছড়া, রুপকারী ইউনিয়নে রুপকারী-করেঙ্গাতলী সড়কে ও খেদারমারা ইউনিয়নে দূরছড়ির বারমাটিলা এলাকায় একই সময়ে পাঁচটি সেতু নির্মিত হয়েছে। এসব সেতুর নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৬ টাকা। বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে সেতুগুলোর নির্মাণকাজও শেষ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে দূরছড়ির বারমাটিলা এলাকায় সেতুটির জন্য। এতে ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৮ টাকা। অথচ এই সেতুটিই এখন কোনো কাজে আসছে না।
জনপ্রতিনিধিরা জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে অধীনে দূরছড়ির বারমাটিলা এলাকায় ধানখেতের মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। যেখানে সেতু নির্মাণ করা হয় সে এলাকাটি বছরে পাঁচ থেকে তিন মাস কাপ্তাই লেকের পাঁচ-ছয় ফুট পানিতে ডুবে থাকে। সেখানে সংযোগ সড়ক করতে বড় বরাদ্দের প্রয়োজন হবে।
বারমাটিলা এলাকার বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে সেতুটি এভাবে পড়ে আছে। প্রথমে দিকে মই দিয়ে সেতু পার হলেও এখন তাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ সেতুর দুই পাশ ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেছে। শুনেছি মেদিনীপুর খাগড়াছড়ির সঙ্গে যাতায়াত করার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। খেদারমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমলেন্দু চাকমা বলেন, ‘সেতুর নির্মাণ স্থান নির্ধারণ ঠিক হয়নি। আমার আগে যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনি সেতু নির্মাণের স্থান নির্বাচন করেছেন। সংযোগ সড়কের জন্য একাধিকবার সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তা ছাড়া সংযোগ সড়ক করতে বড় প্রকল্পের প্রয়োজন হবে। কারণ কাপ্তাই লেকের পানিতে সেতুটি ডুবে যায়।’
এ প্রসঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান সুচিত্র চাকমা বলেন, পানির সমস্যার কথা মাথায় রেখে সেতু নির্মাণের সময় সংযোগ সড়কের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু তা আর পরে বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবদুল আলীম বলেন, ২০১০-১১ অর্থবছরে চার ইউনিয়নের নির্মিত সেতুগুলো কাজে আসছে। কিন্তু খেদারমারা ইউনিয়নের সেতুটি কাপ্তাই লেকের পানি বেড়ে গেলে তলিয়ে যায়। সেজন্য সংযোগ সড়ক করা যাচ্ছে না।