স্বাস্থ্য খাতে বাড়ছে ব্যক্তির পকেটের খরচ

সরকার সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির পকেটের খরচ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তির পকেটের খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটে গতকাল সোমবার সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ) বিষয়ক আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।
মূল উপস্থাপনায় স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তির পকেটের ব্যয় বাড়লে তা অনেক পরিবারের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে। স্বাস্থ্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে বছরে বাংলাদেশে ১৩ শতাংশ পরিবারে আর্থিক বিপর্যয় ঘটে। ৪ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল, তা অর্জিত হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিতরণ করা কাগজপত্রে দেখা যায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে ২০১২ সালে স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন কৌশলপত্র তৈরি করেছিল। তখন স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ ব্যক্তি নিজে বহন করত। কৌশলপত্রে বলা হয়েছিল, ব্যক্তির নিজের খরচের অংশ ধীরে ধীরে কমানো হবে। পাশাপাশি সামাজিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তির ব্যয় বাড়ছে। বর্তমানে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৭ শতাংশ ব্যক্তি নিজের পকেট থেকে দেয়। অধ্যাপক হামিদ বলেন, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে ব্যক্তির পকেটের খরচ বেশি।
স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ ও কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির নিজস্ব খরচ কমানো এবং সামাজিক স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রে দেশ কিছুটা পিছিয়ে আছে। তবে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
আজ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস। গতকালের অনুষ্ঠানে এই দিবসের প্রসঙ্গটি চলে আসে। দেশে সরকারি উদ্যোগে দিবসটি পালিত না হলেও স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট আজ একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য: ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য: অধিকারের জন্য উঠে দাঁড়াও’।
গতকালের অনুষ্ঠানে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে বেশি আলোচনা হয়।