এখনো সরেনি সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার

শ্যামলীর রিং রোডে আতিকুল ইসলামের পোস্টার। ছবি: লুৎফরজামান
শ্যামলীর রিং রোডে আতিকুল ইসলামের পোস্টার। ছবি: লুৎফরজামান

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে কাল মঙ্গলবার। নির্বাচন ২৬ ফেব্রুয়ারি। এরই মধ্যে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিজের পোস্টার ছাপিয়েছেন কেউ কেউ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব পোস্টার অপসারণের সময় দিলেও অনেক জায়গায় এখনো শোভা পাচ্ছে পোস্টার।

গত বছরের শেষ দিনে ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, উত্তর সিটির নির্বাচনী প্রচারের উদ্দেশে সাঁটানো পোস্টার, বিলবোর্ড, তোরণ, দেয়াল লিখনসহ সব প্রচারসামগ্রী ৬ জানুয়ারি রাত ১২টার মধ্যে নিজ উদ্যোগে সরাতে হবে। পোস্টার অপসারণে কেউ ব্যর্থ হলে সেই প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছিল।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের আগে কেউ পোস্টার সাঁটানো কিংবা কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারেন না।

আজ সোমবার ঢাকার গুলশান-১, গুলশান-২, বনানী ও শ্যামলী এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, তৈরি পোশাকমালিকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলামের নামে পোস্টার দেখা গেল শ্যামলীর রিং রোডে। পোস্টারে লেখা, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি, সফল সংগঠক ও ব্যবসায়ী জনাব আতিকুল ইসলাম ভাইকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই’। দেয়ালে কিছু দূর পরপর এ ধরনের বেশ কিছু পোস্টার চোখে পড়ল।

পোস্টারের বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে অনেকে ভালোবেসে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগিয়েছেন। অনেক জায়গায় আমি লোক পাঠিয়ে বিলবোর্ড, পোস্টার অপসারণ করেছি। এখনো যদি কোথাও থাকে, তাহলে আমি লোক পাঠিয়ে তা অপসারণ করে ফেলব। আমাকে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের বলব—নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কেউ আমার নামে পোস্টার লাগাবেন না।’

গুলশান-২ এলাকায় ওয়াসার দেয়ালে বিএনপির সহ প্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদের নামে পোস্টার সাঁটানো আছে। পোস্টারগুলো তিনি তাঁর লোক দিয়ে সাঁটিয়েছেন। তাঁর পোস্টারে লেখা, ‘ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শাকিল ওয়াহেদ। আসুন গড়ি বিশ্বমানের এক নগর’।

পোস্টার অপসারণের বিষয়ে শাকিল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনিই তাঁর লোক দিয়ে পোস্টার সাঁটিয়েছেন। পোস্টার অপসারণের বিষয়ে তিনি শুনেছেন। এখনো যদি কোথাও তাঁর নামে পোস্টার থাকে, তাহলে তিনি তাঁর লোক দিয়ে সেসব অপসারণ করবেন।

গুলশান-২ এলাকায় ওয়াসার দেয়ালে শাকিল ওয়াহেদের পোস্টার। ছবি: লুৎফরজামান
গুলশান-২ এলাকায় ওয়াসার দেয়ালে শাকিল ওয়াহেদের পোস্টার। ছবি: লুৎফরজামান

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে দোয়া কামনা করে পোস্টার সাঁটানোর দায়ে তাঁকে জরিমানা করা হয়। যদিও আজ সরেজমিনে কোথাও তাঁর নামে পোস্টার দেখা যায়নি।

এদিকে ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের পর কোনো প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার দেখা গেলে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সর্বোচ্চ ছয় মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতাও বাতিল করতে পারে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (অঞ্চল-৫) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম অজিয়র রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশন ৬ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত পোস্টার অপসারণের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের সময় দিয়েছিল। এখন কমিশন সিটি করপোরেশনকে যে নির্দেশনা দেবে, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।