বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান কাকলী

কাকলী আক্তার
কাকলী আক্তার

প্রায় ১০ বছর আগে কাকলী আক্তারের মা-বাবার বিচ্ছেদ ঘটে। তাঁর বাবা কুয়েতপ্রবাসী। এইচএসসি পর্যন্ত তিনি কাকলীর পড়াশোনার খরচ দিয়েছেন। এরপর তিনি পড়াশোনাসহ সব খরচ বন্ধ করে দেন।
এদিকে অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে এবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন কাকলী। কিন্তু বাবা খরচ বন্ধ করে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কাকলী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকার কামাল মুন্সী ও সুমি বেগমের মেয়ে। মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর এখন তাঁর বাবা কামাল মুন্সী দ্বিতীয় স্ত্রী ও এক ছেলেসন্তান নিয়ে কুয়েতে আছেন।
কাকলী বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় মা-বাবা আলাদা হয়ে যান। এইচএসসি পরীক্ষা পাসের পর বাবা আমাকে পড়াশোনা করাতে চান না বলে জানিয়েছেন। তিনি আমাকে বিয়ে দিতে চাইছেন। কিন্তু আমি পড়াশোনা করতে চাই। পড়াশোনা করতে চাইলে কোনো খরচ দিতে পারবেন না বলে বাবা আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। বাবা আমাকে নিজের খরচে পড়াশোনা করতে বলেছেন।’

কাকলী জানান, ২০১৪ সালে সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ এবং ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের একই বিভাগ থেকে জিপিএ-৪.৭৫ পান তিনি। তাঁর বাবা এইচএসসির পরই পড়াশোনার খরচ বন্ধ করে দেন। পরে কাকলী তাঁর নানি দিলারা বেগম ও ফারুকুল ইসলাম নামের তাঁর দূরসম্পর্কের এক নানার সহযোগিতায় ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে স্নাতকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। এবার পরীক্ষা দিয়ে কাকলী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন।

কাকলী জানান, ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মেধাতালিকায় ৭১তম হন। গত ২১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষায় কাকলী হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে তাঁকে ভর্তি হতে হবে। ভর্তি হতে ১৫ হাজার ২৫০ টাকা লাগবে। কারও সহযোগিতা না পাওয়ায় তাঁর ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

কাকলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকলেও টাকার অভাবে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কেউ সহযোগিতা করলে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।’

কাকলীকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৭৯৪৫০৩০৮৫ বিকাশ নম্বরে অর্থ পাঠাতে পারেন।