কম শিক্ষার্থী ভর্তি করানোয় অভিভাবকদের বিক্ষোভ

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দীননাথ ইনস্টিটিউশন মডেল হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে আসনের থেকে কম শিক্ষার্থী ভর্তির করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে গতকাল শনিবার স্কুল প্রাঙ্গণে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা বিক্ষোভ করেন।

দীননাথ ইনস্টিটিউশন মডেল হাইস্কুলটি উপজেলা সদরে অবস্থিত। এটি ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ স্কুলের চার-পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনো মাধ্যমিক স্কুল নেই। ফলে উপজেলার অনেক শিক্ষার্থী এ স্কুলের ওপর নির্ভরশীল। এ কারণে প্রতিবছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেক প্রতিযোগিতা হয়।

অভিভাবকেরা বলেন, গত রোববার ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাতে অংশ নেয় ৫২১ জন। ১০০ নম্বরের এ পরীক্ষায় ৩৭৬ জন পাস করে। ওই দিন রাত ১০টায় ফলাফল প্রকাশ করা হয়। তাঁরা বলেন, প্রতিবছর ওই শ্রেণিতে ৫০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই আসন অনুযায়ী নতুনদের নেওয়া হতো। ভর্তি পরীক্ষায় পাস-ফেল নিয়ে এত কড়াকড়ি ছিল না। কিন্তু এ বছর সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হচ্ছে না। আকস্মিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবার কৃতকার্য ৩৭৬ জনকে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও সমসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করা হোক—এ দাবি জানিয়ে স্থানীয় অভিভাবকেরা প্রশাসনের কাছে গত সোমবার আবেদন করেছেন। পাশাপাশি গতকাল শনিবার কয়েক শ অভিভাবক স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত তাঁরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করে ভর্তি আসন কমিয়ে দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। এতে এলাকার দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁরা এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে আগের নিয়ম অনুযায়ী চলার দাবি জানান।

নজমুল মিয়া নামের একজন অভিভাবক বলেন, এখন শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের সময়। তাদের ভর্তির ক্ষেত্রে এভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা ঠিক হচ্ছে না।

স্কুল পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য আলাউর রহমান বলেন, ভর্তি–সংক্রান্ত সভায় সিদ্ধান্ত ছিল ষষ্ঠ শ্রেণিতে সাড়ে পাঁচ শ শিক্ষার্থী নেওয়ার। হঠাৎ করে কেন সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হলো, তা পরিষ্কার নয়।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণয় চন্দ্র দেব বলেন, ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তে ৫৫০ জনকে ভর্তি করার কথা ছিল। তবে শর্ত ছিল যারা কৃতকার্য হবে, তাদের নেওয়া হবে। কারণ এ স্কুল সামনে জাতীয়করণ করা হবে। এর মান ধরে রাখার জন্য তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দীননাথ ইনস্টিটিউশন মডেল হাইস্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, স্কুল পরিচালনা পরিষদ ও বাহুবল উপজেলার ইউএনওর পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার তাঁরা শুধু ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ভর্তি করছেন।

ইউএনও জসিম উদ্দিন বলেন, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব শিগগিরই জাতীয়করণ করা হবে। তাই এ বছর তাঁরা কিছুটা যাচাই-বাছাই করে এ ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন।