চিত্রিত ছাতারে

চিত্রিত ছাতারে। ছবি: আদনান আজাদ
চিত্রিত ছাতারে। ছবি: আদনান আজাদ

মূলত টিলা-পাহাড়ি বন ও চা বাগান-অধ্যুষিত অঞ্চলে বসবাস ‘চিত্রিত ছাতারে’ পাখিদের। খাবারের জন্য গেরিলা কৌশলে চলাচল করে। মাটির ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যেমন এগোতে পারে, তেমনি প্রয়োজনে মুরগির ছানার মতো দৌড়ও দিতে পারে। মূল খাবার এদের পোকামাকড়, কেঁচোসহ অন্যান্য কীট ও লার্ভা। শিকার একটু বড় হলে বা ঠোঁটের ফাঁক থেকে নড়েচড়ে পালাতে চাইলে এরা মাছরাঙাদের মতো এপাশে-ওপাশে আছড়ায়। গাছের গোড়া-বাকল ঠুকরে এরা বিষাক্ত বিছা ও কাঁকড়াবিছা বের করে অতি কৌশলে মেরে ফেলে। খাবার তল্লাশির সময় এতটাই মগ্ন থাকে যে বিপদের খেয়াল থাকে না। আত্মগোপনে পারদর্শী ও বেশ ভীত পাখি এরা। লম্ফঝম্ফেও ওস্তাদ।

চিত্রিত ছাতারের ইংরেজি নাম Puff-throated Babbler। বৈজ্ঞানিক নাম pellorneum ruficeps। দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার, ওজন গড়পড়তা ২৬ গ্রাম।

ভোর ও শেষ বিকেলে এরা ছোট ঝোপে বসে অনেকক্ষণ ধরে মোলায়েম গলায় সুরেলা গান করে। গানের সময় গায়কের দেখা পাওয়া অবশ্য কষ্টকর কাজ।

কপাল ও মাথার রং এদের ঘন জলপাই-বাদামি। চোখজুড়ে কানের পাশটা বাদামি। গলা ও বুকের উপরিভাগ সাদা, বুক-পেটের ওপরটা চমৎকারভাবে চিত্রিত কালচে-বাদামি টান ও ছোপ। পা হলুদাভ, হলুদাভ-ধূসর ঠোঁট। মেয়ে-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। গানের গলাটা ভারী মিষ্টি এদের। বাসা বাঁধার মৌসুমে পুরুষটির গানের গলা যেন খুলে যায় আরও। ‘টি-টি, টিউ-টিউ’ গানে ঝরে পড়ে প্রেমের আবেগ-উচ্ছ্বাস। গোলগাল বলের মতো বাসাটি গড়ে ঝরাপাতা, পাতার ডাঁটি, ঘাস, লতা ইত্যাদি দিয়ে। প্রবেশপথ থাকে এক পাশে। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটে বেরোনোর পর ছানারা বাসা ছাড়ে ১২-১৩ দিনে।