নির্বাচনী বিরোধে হামলা, গুলিতে নিহত ১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলায় গুলিতে শামীম সরকার (২৫) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। নির্বাচনী বিরোধ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আজ রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে গুলি করা হয়। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছে।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার মেঘনা নদীর তীর-সংলগ্ন নবীনগর পূর্ব ইউনিয়নের চরলাপাং গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম ওই গ্রামের সরকার বাড়ির আলমাস সরকারের ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নবীনগর উপজেলায় মেঘনা নদীর ওপারে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা। সম্প্রতি রায়পুরার মির্জাচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাফর উদ্দিন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া। দুজনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। নির্বাচনে জাফর উদ্দিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফারুক ও জাফরের বিরোধ চলছিল। আজ নবীনগর পূর্ব ইউনিয়নের চরলাপাং গ্রামের মেঘনার তীর-সংলগ্ন খেলার মাঠে স্থানীয় তরুণেরা ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। খেলা চলার সময় পাশের মির্জাচর গ্রাম থেকে ফারুকের সমর্থকেরা তিনটি নৌকায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ এসে চরলাপাং গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে শামীম নিহত হন। আহত হয় অন্তত চারজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শামীমের লাশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

নিহত শামীমের ভাই কাউসার সরকার বলেন, ‘আমাদের এখানে রায়পুরার কোনো লোকজন ছিল না। গ্রামের যুবকেরা মাঠে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করেছিল। খেলার মাঠে রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ইউনিয়নের ফারুক মিয়ার লোকজন এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়।’

মির্জাচর ইউপির সদস্য জিতু মিয়া বলেন, ইউপি নির্বাচনসহ নানা ঘটনা নিয়ে গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ফারুক মিয়ার বিরোধ চলছিল।

মির্জাচর ইউপি চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। মামলায় পুলিশ থেকে বাঁচতে আমার লোকজন মাঝে মাঝে চরলাপাং গ্রামে অবস্থান নিত। কিন্তু আজ আমার কোনো লোক ওই গ্রামে ছিল না। সন্ধ্যায় ফারুকসহ তাঁর সমর্থকেরা চরলাপাং গ্রামে গিয়েছিলেন। এ সময় তাঁর লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি করে।’

এ ঘটনায় ফারুক মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার বলেন, নরসিংদীর মির্জাচর ইউনিয়নের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চরলাপাং গ্রামে হামলা চালিয়েছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।