শিক্ষকের বিরুদ্ধে সাংসদ সাইমুমের পাল্টা অভিযোগ

আওয়ামী লীগের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার
আওয়ামী লীগের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার

প্রবীণ শিক্ষক সুনীল কুমার শর্মার বিরুদ্ধে পাল্টা বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার। গতকাল মঙ্গলবার ‘নিজের শিক্ষককে গলাধাক্কা দিলেন সাংসদ সাইমুম’ শিরোনামে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি সুনীল কুমারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন।

গতকাল ই-মেইলে পাঠানো বিবৃতিতে শিক্ষক সুনীল কুমারকে আওয়ামী লীগবিদ্বেষী এবং একাত্তরের শান্তি কমিটির সদস্য বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের এই সাংসদ।

প্রতিবাদ জানিয়ে সাংসদ দাবি করেন, তিনি শিক্ষক সুনীল কুমারকে গলাধাক্কা দিয়েছেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। কিছু বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে সাংসদের উচ্চ বাক্যবিনিময় হয়েছিল। তা ছাড়া সুনীল কোনোকালেই তাঁর শিক্ষক ছিলেন না বলে দাবি করেন ওই সাংসদ।

শিক্ষক সুনীল কুমার হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য হলেও সাংসদ দাবি করেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। তিনি পাকিস্তানি হানাদারদের বাজার করে দিতেন বলেও দাবি করেন সাংসদ। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে ওই শিক্ষকের সম্পৃক্ততা থাকার কথা উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক সুনীল কুমার বলেন, তাঁর বয়স ৬৫ বছর। তিনি রামুতে টানা ৪২ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এই প্রথম প্রকাশ্যে নাজেহাল হলেন; তা-ও আবার একজন জনপ্রতিনিধির হাতে। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে সুনীল কুমার বলেন, বিএনপির সাবেক সাংসদের প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলে কেউ বিএনপি হয়ে যায় না।

বিবৃতিতে সাংসদ সাইমুম বলেন, ওই শিক্ষকের ছেলে সুজন শর্মা কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদের সঙ্গে তাঁর তিক্ততা সৃষ্টি করেছেন। সুজন যাতে এমন কাজ বন্ধ করেন, সে জন্য শিক্ষককে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিলকে তাল বানিয়ে তিনি বিএনপি ও তাঁর প্রতিপক্ষকে অপরাজনীতি করার সুযোগ করে দিচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক সুনীল কুমার বলেন, লোকজনের সামনে সাংসদ সাইমুম তাঁকে গলাধাক্কা দিয়েছেন। এখন তিনি অস্বীকার করলে করার কিছু নেই। কারণ তিনি সাংসদ, তাঁর ক্ষমতা অনেক। সুনীল কুমার আরও বলেন, ‘আমি সাইমুমকে বাড়িতে গিয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়েছি। এর সাক্ষী তার মা।’

প্রসঙ্গত সাংসদ সাইমুম হল-মার্ক ঋণ কেলেঙ্কারির নায়কদের একজন। ঘটনার সময় তিনি সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি পরিচালক সাইমুমকে ঘুষ দিয়েছেন।