'ঘুষের টাকা' ফেরত

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাজালিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এক ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া ‘ঘুষের টাকা’ ফেরত দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে শুনানির এক ফাঁকে বাইরে বেরিয়ে ওই টাকা ফেরত দেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাজালিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক পরে যোগাযোগ করবেন বলেই সংযোগ কেটে দেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর তিনি নিজেই প্রথম আলোর এ প্রতিনিধিকে ফোন করেন। এ সময় তিনি ঘুষ নেওয়া ও ফেরত দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. নুরুল হুদা সিকদার জমির খাজনা দিতে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর বাজালিয়া ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে যান। তখন কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক জমির তালিকা দেখে বলেন, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খাজনা দিতে হবে। এত টাকার কথা শুনে নুরুল হুদা ভড়কে যান। তিনি কাটছাঁট করে খাজনা নির্ধারণের অনুরোধ করেন। তখন কর্মকর্তা এনামুল নতুনভাবে হিসাব কষে ৬৫ হাজার টাকা দিতে বলেন।

নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, পরে ওই টাকা পরিশোধ করলেও তাঁকে ৩২ হাজার ১৭ টাকার ১৩টি রসিদ দেওয়া হয়। বাকি টাকার রসিদ চাইলে কর্মকর্তা এনামুল নানা অজুহাত দেখিয়ে দেননি।

বিষয়টি নিয়ে গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন নুরুল হুদা সিকদার। গতকাল এ বিষয়ে শুনানির জন্য দুই পক্ষকে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়।

নুরুল হুদা সিকদার বলেন, গতকাল শুনানি চলার এক ফাঁকে তিনি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এনামুলের কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চান। একপর্যায়ে তিনি রাজি হয়ে যান। পরে দুজনই কার্যালয়ের বাইরে আসেন। তখন রসিদের বাইরে নেওয়া ৩৩ হাজার টাকা তাঁকে ফেরত দেন এনামুল।

সাতকানিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পক্ষকে ডাকানো হয়েছিল। তাঁরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। নুরুল হুদা শুনানিকালে টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তবে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা অতিরিক্ত টাকা নেওয়া ও ফেরত দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।