মাতৃমৃত্যু কমানোর অর্জন থমকে যাওয়ার কারণ খুঁজতে হবে

স্যার ফজলে হাসান আবেদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
স্যার ফজলে হাসান আবেদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের দৌড়ে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে যে সাফল্য অর্জন করেছিল তার কিছু কিছু বর্তমান সময়ে এসে থমকে গেছে।’

মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়ে ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু অনুপাত বা এমএমআর ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে প্রতি এক লাখ জীবিত নবজাতক জন্মের বিপরীতে ১৯৬-তে থেমে আছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে দারুণ অর্জন করেছিল তা কেন থমকে গেছে তার অন্তর্নিহিত কারণগুলো আমাদের অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে।’

ব্র্যাক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম ২০১৮ সম্মেলনের আলোচনা সভায় ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ এসব কথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী এ সম্মেলনে প্রথম দিন প্যানেল আলোচক হিসেবে তিনি এ বক্তব্য রাখেন।

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মৌলিক সেবার মান উন্নয়নের প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে হবে। আর তা কেবল সরকার, নাগরিক সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি মালিকানা খাতের মধ্যে অর্থপূর্ণ ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্বর মাধ্যমেই সম্ভব। এ সময় তিনি সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এগুলো হলো চরম দারিদ্র্য নিরসন, মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার মান উন্নয়ন ঘটানো।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘চরম দারিদ্র্য নিরসনে আমার প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক অতি দারিদ্র্য থেকে উত্তরণে ‘গ্র্যাজুয়েশনভিত্তিক’ একটি মডেল তৈরি করেছে যা বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের অতি দারিদ্র্য নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ রেখেছে। এর পাশাপাশি বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে সেখানকার পরিস্থিতির উপযোগী করে এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ শিশু শিক্ষার্থীর উপযোগী করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘গুরু প্রাক-প্রাথমিক শিশুদের প্রয়োজন মেটাতে হলে শিক্ষকদের উপযুক্ত পরিচিতিমূলক ধারণা, প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।’ এসব সমস্যা মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের ওপর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিপুল চ্যালেঞ্জ সরকারের একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে আস্থাভাজন অংশীদারদের সহায়তা সরকারের প্রয়োজন হবে, যেখানে সুশীল সমাজ অত্যন্ত গঠনমূলক ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মাদ মুসা, সংস্থাটির স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালন আসিফ সালেহ, অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ কর্মসূচির পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ প্রমুখ।