শিক্ষককে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার মনাষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্জুন বিশ্বাস (৪৩)কে হত্যার দায়ে কালা চাঁনকে (৪০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে নগদ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। কালা চাঁনের বাড়ি একই উপজেলার ছয়গাঁও গ্রামে।

এ ছাড়া অপর তিনজন আসামি কালা চাঁনের ভাই মো. এমদাদুল হক হিরা ওরফে আবু ওরফে সাগর, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জেড এ ফুয়াদ খান ওরফে বাবুল এবং ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে ভাসানিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষক অর্জুন বিশ্বাসকে স্কুলে যাওয়ার পথে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অর্জুনের বাড়ি একই উপজেলার রামপুর-দশাল গ্রামে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। বিদ্যালয়ের তহবিলে উন্নয়ন খাতের (স্লিপ প্রকল্পের) ৩০ হাজার টাকা জমা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা ও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে ভাসানি ওই টাকা তাঁদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে চাপ দেন। এতে শিক্ষক অর্জুন রাজি না হওয়ায় পর্ষদের সদস্য জেডএ ফুয়াদ খানসহ কয়েক জন ক্ষুব্ধ হন। এর জেরেই কালা চাঁনের নেতৃত্বে রামদা দিয়ে কুপিয়ে প্রধান শিক্ষককে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহতের স্ত্রী মায়া রানী বিশ্বাস বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ওরফে ভাসানি, ছয়গাঁও গ্রামের কালা চাঁন, তাঁর ভাই মো. এমদাদুল হক ওরফে হিরা ও অপর ভাই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য জেডএ ফুয়াদ খান ওরফে বাবুলের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে পরের বছরের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালত এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. সাইফুল আলম প্রদীপ এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মানবেন্দ্র বিশ্বাস উজ্জ্বল ও মাজহারুল ইসলাম খান।