শীতলক্ষ্যার বালু লুট

বালু তোলার কারণে ইটভাটার কিছু অংশ নদীতে চলে গেছে
বালু তোলার কারণে ইটভাটার কিছু অংশ নদীতে চলে গেছে

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ড্রেজার (খননযন্ত্র) দিয়ে বালু লুট করা হচ্ছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানা যুবলীগের নেতা সোহাগ খন্দকার বালু তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বালু তোলার কারণে গত বুধবার একটি ইটভাটার অংশবিশেষ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

ওই ইটভাটার নাম মেসার্স মুগ্ধ ট্রেডার্স (এমএমবি)। ভাটার জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার এলাকাবাসী ড্রেজারের দুই কর্মীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। আটক দুজন হলেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের শম্ভুপাড়ার মিঠু মিয়া ও সালাউদ্দীন তালুকদার। পলাশ থানার উপপরিদর্শক মীর তহরুল ইসলাম দুজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডাঙ্গার ভিরিন্দা ও কাজৈর গ্রামের পাশে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়-সাত বছর ধরে বালু তোলা হচ্ছে। নদীর অপর পারের কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তুলছেন। এতে এলাকার ফসলি জমি ও ইটভাটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এভাবে বালু তোলার কারণে পাশের এইচআরবি ইটভাটার ৩০ লাখ ইট নদীগর্ভে চলে যায়। তখন পলাশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বালু তোলা বন্ধ করেছিলেন। অবশ্য সাময়িক বন্ধ থাকলেও বালু তোলা থামেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, কালীগঞ্জ থানা যুবলীগের নেতা সোহাগ খন্দকার পলাশের ভিরিন্দা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত ইটভাটার মালিক মোরশেদুল হক ভূইয়া বলেন, ‘বালু তোলার কারণে গত কয়েক দিন ধরে ভাটার পাশে মাটি ভেঙে পড়ছে। সোহাগ খন্দকারকে এখান থেকে বালু না তোলার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি। ফলে ভাটার ১০ লাখ টাকার ইট, ৮০ লাখ টাকার কয়লাসহ প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল নদীতে চলে গেছে। ভাটার প্রায় ৩০ বিঘা জমির ১২ বিঘাই নদীগর্ভে চলে গেছে।’

এ বিষয়ে জানতে গতকাল সোহাগ খন্দকারের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোন ধরেন। তবে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সংযোগ কেটে দেন।   

ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবের উল হাই বলেন, ‘কালীগঞ্জের কিছু লোক দীর্ঘদিন ধরে ওই অঞ্চলের নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছে। আমরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবগত করেছি।’

ইউএনও ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি বলেন, নদী থেকে বালু তোলার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ওসিকে জানানো হয়েছে।