পাকা না কাঁচা সড়ক বোঝা কঠিন

ভাঙা রাস্তার পাশে উন্মুক্ত নালা। বৃষ্টি হলে ডুবে যায় রাস্তাটি। মাঝেমধ্যে নালার পানি উপচে রাস্তায় জমে থাকে। এই চিত্র ডিএনসিসির ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া শাপলার মোড় থেকে চেয়ারম্যানের লাল মাঠ কবরস্থান পর্যন্ত সড়কের l প্রথম আলো
ভাঙা রাস্তার পাশে উন্মুক্ত নালা। বৃষ্টি হলে ডুবে যায় রাস্তাটি। মাঝেমধ্যে নালার পানি উপচে রাস্তায় জমে থাকে। এই চিত্র ডিএনসিসির ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া শাপলার মোড় থেকে চেয়ারম্যানের লাল মাঠ কবরস্থান পর্যন্ত সড়কের l প্রথম আলো

সড়কগুলোর অনেক জায়গায় পিচের চিহ্নমাত্র নেই। বেরিয়ে এসেছে মাটি। সড়কের ইটের টুকরোগুলো উঁচু-নিচু হয়ে আছে স্থানে স্থানে। এমন অবস্থা যে কেউ প্রথম দেখায় সেগুলোকে কাঁচা রাস্তা বলে ভুল বুঝতে পারেন।

এমন অবস্থা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুন যুক্ত হওয়া ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেশির ভাগ সড়কের। গত জুলাইয়ে হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কাঠামো ভেঙে এই ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে। ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলো হলো কামাড়পাড়া, কালিয়ারটেক, খায়েরটেক, ভাটুলিয়া, ধউর ও রাজাবাড়ি। ওয়ার্ডটিতে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের বসবাস।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গত ১০ বছরে এলাকার রাস্তাগুলো সংস্কার বা মেরামত—কোনোটিই করা হয়নি। তাঁরা বলেন, প্রতি বর্ষায় রাস্তায় পানি জমে থাকে। এ ছাড়া যেকোনো সময় বৃষ্টি হলেই এসব রাস্তায় চলতে কষ্ট হয়। তখন সড়কগুলো নালা হয়ে যায়।

এলাকার লোকজন বলেন, রাস্তা ঠিক সময়ে সংস্কার করা হয়নি। এতে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে।

দেখা যায়, এলাকার প্রধান রাস্তা কামারপাড়া স্কুল থেকে মাদবর বাড়ি সড়ক, রাজাবাড়ি চৌরাস্তা থেকে গুলগুলার মোড় হয়ে তুরাগ থানা রোডের প্রায় চার কিলোমিটার অংশ জায়গায় জায়গায় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া কামাড়পাড়া শাপলার মোড় থেকে চেয়ারম্যানের লাল মাঠ হয়ে কবরস্থান রোড, ভাটুলিয়া মহিলা মাদ্রাসা থেকে উত্তর দিকে তালতলা রোড, ভাটুলিয়া দোতলা মসজিদ থেকে ম্যাস গ্রুপের সামনের রাস্তা, ডেলগো ট্রেনিং সেন্টারের সামনে থেকে রাজাবাড়ি মোড় পর্যন্ত রাস্তাগুলো বেহাল। অন্যদিকে ওয়ার্ডটিতে পানিনিষ্কাশনের নালা নেই।

কামারপাড়ার বাসিন্দা মো. ইমন মোল্লা বলেন, পানি জমে থাকার কারণেই মূলত রাস্তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তাই রাস্তার পাশাপাশি পানিনিষ্কাশনের নালা তৈরি করা জরুরি। তিনি বলেন, নালা নির্মাণ না করলে বছর বছর রাস্তা মেরামত করেও কোনো লাভ হবে না।

রাজাবাড়ির বাসিন্দা খন্দকার রাশেদ বলেন, ‘আমাদের সিটির ভেতরে নেওয়া হয়েছে। অথচ নগরের বাসিন্দা হিসেবে যেসব সুযোগ-সুবিধা আমাদের পাওয়া উচিত, সেগুলোর কিছুই ঠিক করা হয়নি।’ তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়নে অবশ্যই অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সিটির প্রথম কাজ হবে রাস্তা সংস্কার করা। সঙ্গে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখাটাও অনেক জরুরি।

ভাটুলিয়ার বাসিন্দা কামরুন নাহার বলেন, শুধু রাস্তা ও পানিনিষ্কাশনের নালা তৈরি করলেই হবে না, ভবিষ্যতের চিন্তা করে রাস্তাগুলো বড়ও করতে হবে।

এলাকার লোকজন বলেন, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অনেক এলাকায় দিনের পর দিন জমে থাকে বৃষ্টির পানি। ভাঙা রাস্তায় নারী ও শিশুদের পথ চলতে বেশি কষ্ট হয়।

রাস্তার সমস্যার কথা স্বীকার করে হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, অর্থসংকটের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজন অনুসারে রাস্তার উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। যেটুকু রাস্তার কাজ করা হয়েছে, সব পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে করতে হয়েছে।