উপকমিটিতে পদবঞ্চিতদের তোপের মুখে কাদের

ওবায়দুল কাদের (প্রথম আলোর ফাইল ছবি)।
ওবায়দুল কাদের (প্রথম আলোর ফাইল ছবি)।

আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদক পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আজ শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।

দলের একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার কক্ষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের একটি বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের উপকমিটিতে পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের কিছু সাবেক নেতা তাঁর কক্ষের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন সংগঠনটির সাবেক কয়েকজন নেতা ওই কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করলে কক্ষটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় সহসম্পাদক পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা ওই কক্ষের সামনে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এভাবে প্রায় কিছু সময় ওবায়দুল কাদের কক্ষের ভেতরেই থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতারা কক্ষের বাইরে থেকে ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চান, আওয়ামী লীগের উপকমিটিতে কেন বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা-কর্মীদের স্থান দেওয়া হলো এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের কেন মূল্যায়ন করা হলো না। ওবায়দুল কাদের ভেতর থেকে এর কোনো জবাব দেননি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর একপর্যায়ে পাশের কক্ষে থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বেরিয়ে আসেন। তাঁরা বিক্ষুব্ধ নেতাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এরপর ওবায়দুল কাদেরের কক্ষের দরজা খুলতে বললে দরজাটি খোলা হয়। ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন সাবেক জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন তাঁরা। এরপর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা একই প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সহসম্পাদকের এই উপকমিটি দেওয়া হয়নি। তবু বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষ বিষয়টি জেনে গেছে। বর্তমানে এই উপকমিটি স্থগিত করা হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে সঠিক যাচাইবাছাইয়ের পর উপকমিটির সহসম্পাদক পদে কমিটি দেওয়া হবে। এরপর সন্ধ্যা সাতটার দিকে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতারা দলের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বিক্ষোভ মিছিলের সময় উপকমিটির সহসম্পাদক পদ পাওয়া একজনের সঙ্গে পদবঞ্চিত কয়েকজনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে অন্য নেতারা তাঁদের শান্ত করেন।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক বিক্ষুব্ধ একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সহসম্পাদক পদের জন্য মূল্যায়ন না করে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদলের লোকজনকে পদ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি। তবে একপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বিক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহফুজুর রহমান, শাহ মোস্তফা আলমগীর, হেমায়েত উদ্দিন, শাহীনুর রহমান, হাসানুজ্জামান লিটন, টিটন, রিয়াজ উদ্দিন সুমন, হাসানুজ্জামান তারেক, শামসুল কবির রাহাত, আল মাহমুদ, আফরিন নুসরাত প্রমুখ। তাঁরা ছাত্রলীগের বিগত তিনটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিভিন্ন পদে ছিলেন।