আপন জুয়েলার্সের মালিকের জামিন

অর্থ পাচারের অভিযোগে উত্তরা থানায় করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদ আজ রোববার জামিন পেয়েছেন। পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ এ মামলায় জামিন পাওয়ায় দিলদার আহমেদের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।

জামিন প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি শেষে এর আগে হাইকোর্ট বিষয়টি স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রেখেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে দিলদারের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ।

আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক দিলদার আহমেদ এবং তাঁর দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দিলদার আহমেদের নামে রয়েছে তিনটি মামলা। তাঁর দুই ভাই আগেই জামিন পান। দিলদার আহমেদ তাঁর সর্বশেষ মামলায় আজ জামিন পেলেন।

এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি তিনজনকে দেওয়া জামিন স্থগিত করেছিলেন। পরে ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান আপিল বিভাগ। সর্বশেষ ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল করে, যার ওপর ৮ জানুয়ারি শুনানি হয়। শুনানি শেষে দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক তিনটি লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন।

বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের নাম সামনে আসে। ওই ঘটনায় করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। গত ৪ জুন শুল্ক বিভাগ আপন জুয়েলার্সের ডিএনসিসি মার্কেট, উত্তরা, মৌচাক, সীমান্ত স্কয়ার ও সুবাস্তু ইনম শাখা থেকে প্রায় ১৫ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড জব্দ করার পর তা রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা হয়। পরে দিলদার আহমেদ এবং তাঁর দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পৃথক পাঁচটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এসব মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তাঁরা জামিন নিলেও আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে গত ২৪ অক্টোবর তাঁরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।