শীতলক্ষ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের লাশ

পারভেজ আহমেদ
পারভেজ আহমেদ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পারভেজ আহমেদ (২০) নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বড়ালু গ্রামে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

নিহত পারভেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি রূপগঞ্জের বড়ালু এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। পুলিশের ধারণা, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ, নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পারভেজ স্থানীয় মেঘনা শ্রমজীবী সমবায় সমিতিতে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে খণ্ডকালীন মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে সমিতির টাকার হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে কল করে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ। আজ বেলা ১১টার দিকে সমিতির পেছনে শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁর লাশ ভাসতে দেখে এলাকার লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নদী থেকে পারভেজের লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, পারভেজ খুব ভালো ও মেধাবী ছেলে। তাঁকে কারও সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। তাঁর বাবা জয়নাল আবেদীন ডেমরা বাওয়ানী জুট মিলের শ্রমিক ছিলেন। এখন তিনি অসুস্থ। এ কারণে পারভেজ পড়াশোনার পাশাপাশি সমিতিতে চাকরি করে সংসার চালাতেন। তাঁর ছোট দুই ভাই রয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত পারভেজের বাড়িতে চলছে মাতম। বড় সন্তানকে হারিয়ে মা পারুল বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, পারভেজের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অবস্থায় চলতি বছর তিনি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেননি। ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নিহত পারভেজের মা।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাঈল হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। ধারণা করা হচ্ছে, সমিতির আর্থিক বিষয়ে গন্ডগোলের কারণে পারভেজকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমিতির ব্যবস্থাপক সোহাগ, সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও মাঠকর্মী শারমীনকে আটক করা হয়েছে। এতে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।