খুলনার রাজিন হত্যায় 'মূল' অভিযুক্ত আটক

ফাওমিদ তানভীর রাজিন
ফাওমিদ তানভীর রাজিন

খুলনা নগরের পাবলিক কলেজের মাঠে ছুরিকাঘাতে নিহত ফাওমিদ তানভীর রাজিন (১২) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ‘মূল’ অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার সকালে রূপসা উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নগরে তাদের বাড়ি থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, আটক হওয়া ছেলেটির নাম মামলার এজাহারে নেই। তবে রাজিনের বুকে ছুরি মেরেছিল বলে সে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই ছেলেকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় কিশোর আধিপত্য নিয়ে কিছুদিন ধরে তার সঙ্গে রাজিনের দ্বন্দ্ব চলছিল। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই দিন রাজিনকে হত্যা করা হয় ।

আটক হওয়া ওই ছেলের বয়স নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের ধারণা, ছেলেটির বয়স ১৮ বছর হতে পারে। প্রায় চার বছর আগে সে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছিল। জন্মসনদ দেখে বয়স নিশ্চিত করতে হবে।

বয়স নিশ্চিত না হওয়ায় প্রথম আলোর নীতিমালা অনুযায়ী ওই ছেলের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

ওই ছেলেকে আটকের পর খালিশপুর থানায় সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাহবুব হাকিম, উত্তর এলাকার উপপুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন, খালিশপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার এস এম আলবেরুনী ও খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।

মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাহবুব হাকিম বলেন, আগে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ কিশোর জানিয়েছে, ওই ছেলেটিকে তারা রক্তমাখা ছুরি নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখেছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ছেলেটির নানা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আজ তাকে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাদের বাড়ি থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। রাজিনের বুকে ছুরি মারার কথা সে স্বীকার করেছে।

গত শনিবার রাত নয়টার দিকে পাবলিক কলেজে ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে কয়েকজন রাজিনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয় যায়। তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খুলনা পাবলিক কলেজটি নগরের বয়রা এলাকায়। ওই কলেজে তৃতীয় শ্রেণি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। রাজিন ছিল ওই কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

এ হত্যার ঘটনায় গতকাল রোববার দুপুরে রাজিনের বাবা শেখ জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে নগরের খালিশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ছয় কিশোর ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, বান্ধবীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় রাজিনকে হত্যা করেছে  ওই কিশোরেরা।

ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে আটক করে। মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।