৮ কিলোমিটার জুড়েই ভোগান্তি
আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির জায়গায় জায়গায় গর্ত। কোথাও কোথাও পিচঢালাইয়ের লেশমাত্র নেই। ইটের খোয়া বেরিয়ে সমানে উড়ছে ধুলাবালু। ভাঙাচোরা রাস্তাটিতে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের কালামিয়ার পোল-ভূঁইয়ারহাট সড়কের চিত্র এটি। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটির বেশির ভাগ অংশের অবস্থাই বেহাল। এই সড়কটি উপজেলার নরোত্তমপুর ও বাটইয়া ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদর এবং জেলা শহরে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কালামিয়ার পোল-ভূঁইয়ারহাট সড়কটি চার বছর আগে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়েছে। এরপর প্রতিবছরই বর্ষায় রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে গত বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় সড়কটির বেশি ক্ষতি হয়। এমনকি ভাঙন প্রতিরোধক প্রাচীরগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে সড়কটির কালামিয়ার পোল থেকে ভূঁইয়ারহাট পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, সড়কের কালাপোল থেকে কাছারির বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে অন্তত শ খানেক ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কের নরোত্তমপুর উচ্চবিদ্যালয়, কালীরবাজারে পূর্ব পাশে, ফরাজীবাজারের পশ্চিম পাশের বিস্তীর্ণ অংশ ভেঙে পড়েছে পাশের পুকুরে।
নরোত্তমপুরের কালীরবাজার এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি কবিরহাট উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়ক দিয়ে নরোত্তমপুর ও বাটইয়া ইউনিয়নের লোকজন উপজেলা সদরে এবং জেলা শহরে যাতায়াত করে। এ ছাড়া এই সড়ক দিয়ে পাশ্ববর্তী সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়ন এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর অংশের লোকজন জেলা শহরে যাতায়াত করে। কিন্তু সড়কটি গত কয়েক বছর ধরে সংস্কার না করায় বর্তমানে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সড়কের ফরাজীবাজার এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস এবং পণ্যবাহী বিভিন্ন গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু ফরাজীবাজারের পাশে একাধিকস্থানে সড়কের বেশ কিছু অংশ ভেঙে পাশের পুকুরে পড়ে গেলেও তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। সড়কটি দিয়ে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাঁদের।
পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত পিকআপ ভ্যানচালক মো. ইলিয়াছ বলেন, সড়কের দুরবস্থার কারণে পণ্য নিয়ে আসতে ইচ্ছা হয় না। একবার এই সড়কে পণ্য নিয়ে এসে ফিরে গেলে গাড়িতে কোনো না কোনো সমস্যা দেখা দেয়। এতে অনেক পিকআপ ভ্যানচালক এই সড়কে ভাড়া নিয়ে আসতে রাজি হন না।
রিকশাচালক মো. ইলিয়াছ বলেন, গত বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই সড়কটি। ইট ফেলে কোনো রকমে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে সড়কটিকে। কিন্তু ইটের ওপর দিয়ে রিকশা চালানো খুবই কষ্টকর। খারাপ রাস্তায় ঝাঁকুনির কারণে অনেক যাত্রী রিকশায়ও উঠতে চান না।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মীর হোসেন প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সড়কটিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত প্রকল্পের আওতায় তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সহসাই দরপত্র আহ্বানসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।