আরেকটি ভবন হেলে পড়েছে

*ভবনটি লালবাগের শহীদনগরের রাজ নারায়ণ ধর রোডে অবস্থিত।
* পাঁচতলা ভবনের বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
*রোববার রাজ নারায়ণ ধর রোডের আরেকটি ভবন হেলে পড়ে।
*রাজউকের সঙ্গে সমন্বয় করে করণীয় নির্ধারণ করবে ডিএসসিসি।

লালবাগের শহীদনগরে হেলে পড়া আরেকটি ভবন। পাঁচতলা এই ভবনটিকে গতকাল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে l ছবি: প্রথম আলো
লালবাগের শহীদনগরে হেলে পড়া আরেকটি ভবন। পাঁচতলা এই ভবনটিকে গতকাল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে l ছবি: প্রথম আলো

পুরান ঢাকার লালবাগের শহীদনগরের রাজ নারায়ণ ধর রোডের আরেকটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন হেলে পড়েছে। গতকাল সোমবার ভবনের ফটকে তালা দিয়ে বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রাজ নারায়ণ ধর রোডের ৮ নম্বর গলিতে হেলে পড়া ওই ভবনের (হোল্ডিং নম্বর ৩৯৩) দুই পাশের আরও দুটি তিনতলা ভবন হেলে পড়েছে।

গত রোববার রাজ নারায়ণ ধর রোডের একটি ভবন হেলে পড়ার খবরে সেটির বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম আনছারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের জানামতে ৩৯৩ নম্বর হোল্ডিংয়ের ভবনটি হেলে পড়েছে। তাই ভবনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ, এই ভবনে বসবাস করা নিরাপদ নয়’ লেখা সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়েছে। অন্য দুটির বিষয়ে তাঁরা জানেন না।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গত বছরের শুরুতে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। আট মাসের মাথায় নির্মাণকাজ শেষ হয়। নির্মাণের সময় ভবনটি একটু কাত হয়ে পড়ে। চার মাস আগে ভবনের ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। গত শনিবার রাতে ভবনটি হেলে পড়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে রাতেই ভবনটি পরিদর্শন করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তাঁদের কথামতো রাতেই মালামালও সরিয়ে নিতে শুরু করেন বাসিন্দারা।

গতকাল বিকেলে দেখা যায়, শহীদনগরের রাজ নারায়ণ ধর রোডের ৮ নম্বর গলির ৩৯৩ হোল্ডিংয়ের পাঁচতলা ভবনটি পাশের তিনতলা ভবনের দিকে হেলে পড়েছে। ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন উৎসুক লোকজন। তাঁরা ভবনগুলোর হেলে পড়ার কারণ নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন।

রাজ নারায়ণ ধর রোডের বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরই ভবনটি হেলে পড়ে। এ ব্যাপারে মহল্লার লোকজন বাড়ির মালিক পীর মোহাম্মদকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তিনি কারও কথা শোনেননি।

ভবন হেলে পড়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর ভবনের মালিক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এ কারণে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

রাজউকের অঞ্চল-৫-এর অথরাইজড কর্মকর্তা আশীষ কুমার সাহা বলেন, রাজ নারায়ণ ধর রোডে নতুন করে আরেকটি ভবন হেলে পড়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

গত নভেম্বরে ৩৯৩ নম্বর হোল্ডিংয়ের এই পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন সাফিয়া খাতুন। তিনি বলেন, ভবনটি যে হেলে আছে, তা আগে তাঁরা বুঝতে পারেননি। গত রোববার রাতে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের কাছ থেকে তাঁরা বিষয়টি প্রথম জানতে পারেন। পরে তাঁদের চোখেও বিষয়টি ধরা পড়ে। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ভবন ছাড়তে বলায় আমরা বিপাকে পড়েছি। অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদেরও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’

ডিএসসিসির অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম আনছারুজ্জামান বলেন, গতকাল ডিএসসিসির নগর ভবনে নতুন ভবন নির্মাণে নীতিমালাবিষয়ক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিটি করপোরেশন, রাজউক, ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে শহীদনগরের পৃথক দুটি ভবন হেলে পড়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এখন রাজউকের সঙ্গে সমন্বয় করে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।