চকরিয়ায় বন্য হাতির মৃত্যু

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ঘোনারপাড়া এলাকা থেকে একটি বন্য হাতি মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন, লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় হাতিটিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তবে বন বিভাগ এবং ময়নাতদন্তকারী ভেটেরিনারি সার্জন বলেছেন, অসুস্থ হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় হাতিটি মারা যায়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, খাবারের সন্ধানে মাঝেমধ্যে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকালয়ে বন্য হাতি ঢুকে পড়ে। এসব হাতি মানুষের বসতঘর ও ধানখেতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। কয়েক দিন ধরে দলছুট একটি হাতিকে লোকালয়ের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। সোমবার গভীর রাতে হাতিটি বনের পার্শ্ববর্তী জমিতে নামলে গুলি করা হয়। এতে মৃত্যু হয় হাতিটির। মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় লোকজন ও বনকর্মীরা হাতিটিকে দেখতে পান।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফাঁসিয়াখালী বন বিট কার্যালয় থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরে বনের পাশে জমিতে একটি বিশালাকার মৃত হাতি পড়ে আছে। বন বিভাগের লোকজন হাতিটির চারপাশে খুঁটি দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। কয়েকজন বনপ্রহরী হাতিটিকে পাহারা দিচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনকে হাতির আশপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। হাতিটির শুঁড় দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। শুঁড়ের ডান পাশের নিচে একটি ছোট ছিদ্র দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ফাঁসিয়াখালী বন বিট কর্মকর্তা এস এম এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হাতিটির বয়স ৩৫ বছর হতে পারে। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে অসুস্থ হয়ে হাতিটি মারা গেছে। কেউ তাকে গুলি করেনি।

বন বিট কর্মকর্তা বলেন, পাহাড়ে খাদ্যাভাব দেখা দিলে শুষ্ক মৌসুমে বন্য হাতি লোকালয়ে নেমে আসে। এই হাতিও হয়তো খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এসেছে। ওই সময় অসুস্থ হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়।

হাতির ময়নাতদন্ত করেন ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হাতিটির শরীরের বাইরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে লিভারে কিছু সমস্যা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অসুস্থতাজনিত কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।

২০১৬ সালের ১০ মার্চ চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্ণগ্রাম এলাকায় একটি বন্য হাতিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। একই বছর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া এলাকায় আরেকটি হাতিকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করেছিল দুর্বৃত্তরা।