রাজিন হত্যায় এক কিশোরের স্বীকারোক্তি

ফাওমিদ তানভীর রাজিন। ফাইল ছবি
ফাওমিদ তানভীর রাজিন। ফাইল ছবি

খুলনা নগরের পাবলিক কলেজের মাঠে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ফাওমিদ তানভীর রাজিন (১২) হত্যায়  গ্রেপ্তার এক কিশোর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোর রাজিনের বুকে ছুরি মেরেছিল বলে স্বীকার করেছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলামের কাছে সে ১৬৪ ধারায় ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রেপ্তার অন্য দুই কিশোরকেও আদালতে তোলা হলে তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

গতকাল সোমবার সকালে রূপসা উপজেলার একটি গ্রাম থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ওই কিশোরকে আটক করা হয় (http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1414876/)। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নগরে তাদের বাড়ি থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। আটকের পর ওই কিশোরের বয়স নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে আজ মামলার এজাহারে তার বয়স দেখানো হয়েছে ১৭ বছর। বয়স পরিপূর্ণ না হওয়ায় প্রথম আলোর নীতিমালা অনুযায়ী ওই কিশোরের নাম প্রকাশ করা হয়নি। এই মামলার অন্য আসামিরাও কিশোর। দোষ স্বীকার করা কিশোরের নাম মামলার এজাহারে ছিল না।

নগরের খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, নিহত রাজিনের বান্ধবীকে নবম শ্রেণির এক ছাত্র উত্ত্যক্ত করেছিল। এ নিয়ে শনিবার রাতে পাবলিক কলেজ মাঠে অনুষ্ঠান চলাকালে রাজিনের সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়। এ সময় নবম শ্রেণির ওই ছাত্র ফোন করে ছুরিকাঘাতকারী কিশোরকে ডেকে আনে। ২০-২৫ মিনিট পর ওই কিশোর আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে সে রাজিনের বুকে ছুরি মারলে সবাই পালিয়ে যায়। পরে রাজিনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন

ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া ওই কিশোর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরে সে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়।

খুলনা পাবলিক কলেজটি নগরের বয়রা এলাকায়। ওই কলেজে তৃতীয় শ্রেণি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। রাজিন ছিল ওই কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

এ হত্যার ঘটনায় রোববার দুপুরে রাজিনের বাবা শেখ জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে নগরের খালিশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ছয় কিশোর ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, বান্ধবীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় রাজিনকে হত্যা করেছে ওই কিশোরেরা।

ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত পাঁচ কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ওই কিশোরকে আটক করে আজ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।