গ্রেপ্তারের পর জামিন ওয়াহিদুল ও কামালের

গ্রেপ্তারের সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেয়েছেন এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও সাবেক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড ট্রেজারি শাখার প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল। 

অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাত আটটার দিকে তাঁরা জামিন পান। তবে একই অভিযোগে একই সময় গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী সাইফুল হককে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে গত মাসে এ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, মতিঝিল থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাঁদের আজ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার বাদী হয়ে ১৬৫ কোটি টাকা (২ কোটি ২৫ হাজার ডলার) পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজনসহ আটজনের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় প্রতারণা, দুর্নীতি, অর্থ পাচারসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তার না হওয়া মামলার পাঁচ আসামি হলেন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ চৌধুরী, ফজলুর রহমান, সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ লোকমান, মাহফুজুল ইসলাম ও নুরুল আমিন।

দুদক সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পরে তাঁদের তিনজনকে মহানগর হাকিম আবু সাঈদের আদালতে তোলা হলে আদালত ওয়াহিদুল হক ও আবু হেনা মোস্তফা কামালের জামিন মঞ্জুর করেন। আর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাইফুল হককে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

যা আছে এজাহারে
দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের সদস্য খুররম আবদুল্লাহ ও আবদুস সামাদ খান ব্যবসায়ী সাইফুল হকের বন্ধু ছিলেন। এবি ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ করা টাকা পাচারের উদ্দেশ্যে এই দুজনের সঙ্গে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হকের পরিচয় করিয়ে দেন সাইফুল হক। ওয়াহিদুল ও সাইফুল একাধিকবার দুবাইয়ে এই প্রতারকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে ব্যাংকের হেড অব ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামালকে নিয়ে দুবাইয়ে গিয়ে এদের সঙ্গে মিটিং করেন ওয়াহিদুল হক। এ জন্য তাঁরা কোনো দাপ্তরিক অনুমোদন নেননি, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকেও সভার বিষয়ে কিছু না জানিয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুবাইয়ে এসব সভা করেন তাঁরা।

দুদক সূত্রগুলো জানায়, সাইফুল সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ফ্লাই দুবাইয়ের স্থানীয় এজেন্ট (জিএসএ) স্কাই অ্যাভিয়েশনের পরিচালক ছিলেন । এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর কিছু ব্যবসা রয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে ফ্লাই দুবাইয়ের নামে শুল্কমুক্ত কোটায় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা চারটি বিলাসবহুল গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দারা আটকে দিলে সাইফুল হক ও তাঁর প্রতিষ্ঠান স্কাই অ্যাভিয়েশন আলোচনায় আসে। পরে রোলস রয়েলস, পোরশে, রেঞ্জ রোভার স্পোর্টস ও ল্যান্ড রোভার ডিসকভারি ফোর এস গাড়িগুলো জব্দ করা হয়।