লাল বাহাদুরের চাঁদাবাজি!

বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে হাতি ব্যবহার করে চলছে চাঁদাবাজি। ছবি: প্রথম আলো
বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে হাতি ব্যবহার করে চলছে চাঁদাবাজি। ছবি: প্রথম আলো

রাস্তা দিয়ে বীরদর্পে হেঁটে যাচ্ছে হাতি। পিঠে বসে আছেন এক তরুণ। তাঁরও রাজা রাজা ভাব। সামনে দিয়ে যে যানবাহনই যাচ্ছে, সেটিকেই থামানো হচ্ছে। পথচারীদেরও থামানো হচ্ছে। তোলা হচ্ছে টাকা। কেউ দিতে না চাইলে শুঁড় তুলে হুংকার দিচ্ছে। ভয় পেয়ে সবাই পকেটে বা ব্যাগে হাত ঢোকাচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বদিউজ্জামান ব্যাপারীপাড়া সড়কে এ ঘটনা দেখা যায়।

জানা যায়, হাতির নাম ‘লাল বাহাদুর’। যানবাহন থামিয়ে হাতি দিয়ে এমন চাঁদাবাজি অনেকেই অবাক হয়ে দেখেন। কেউ কেউ মন্তব্য করেন, ‘লাল বাহাদুরের’ এমন চাঁদাবাজি রোধ করার কি কেউ নেই?

বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে হাতি ব্যবহার করে চলছে চাঁদাবাজি। ছবি: প্রথম আলো
বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে হাতি ব্যবহার করে চলছে চাঁদাবাজি। ছবি: প্রথম আলো

রিকশায় যাত্রী নিয়ে গোয়ালন্দ বাজারে যাচ্ছিলেন চালক আবদুর রহিম মণ্ডল। বললেন, রিকশার সামনে এমনভাবে শুঁড় উঁচিয়ে ধরছে। এক যাত্রীর পকেটে ছিলই মাত্র ৫০ টাকা। ভাঙতি না থাকায় তিনি পুরো টাকাটা দিতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি রিকশাওয়ালাকেও দিতে হয়েছে ১০ টাকা।

মোটরসাইকেলে করে অফিসের কাজে যাচ্ছিলেন আসলাম নামের এক যুবক। তিনি জানান, ‘ভাই, উপায় নাই। যেভাবে সামনে এসে দাঁড়ায়, বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়।’

হাতির পিঠে থাকা তরুণ জানালেন তাঁর নাম সৈকত শেখ। তিনি ফরিদপুরের দিকে যাচ্ছেন। এত সাতসকালে আসার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা রাতভর নানা ধরনের খেলা দেখাই। খেলা শেষে সাতসকালেই ‘লাল বাহাদুরের’ (হাতির নাম) খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি। প্রতিদিন অনেক খাবার লাগে ও টাকা খরচ হয়। তা জোগাড় করতেই সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছি।’

বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে হাতি ব্যবহার করে চলছে চাঁদাবাজি। ছবি: প্রথম আলো
বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে হাতি ব্যবহার করে চলছে চাঁদাবাজি। ছবি: প্রথম আলো

এভাবে গাড়ি ও পথচারীদের থামিয়ে টাকা তোলা একধরনের চাঁদাবাজি কি না, জানতে চাইলে সৈকত বলেন, মানুষ হাতি দেখলে এমনিতেই খুশি হয়ে টাকা দেয়। কারও কাছ থেকে জোর করে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন অন্তত পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। তবে দিন শেষে কোনো দিন ১০ হাজার টাকা উঠে। আবার কোনো কোনো দিন এর চেয়ে বেশি বা কম টাকাও ওঠে।

ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতে গেলে তাড়াতাড়ি ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন সৈকত শেখ।