ঢাকায় গ্রেপ্তারের পর পাবনায় 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত

পাবনার বেড়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে জুলহাস মণ্ডল (৪২) নামের চরমপন্থী দলের এক আঞ্চলিক নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার আমিনপুর থানাধীন ঢালারচর ইউনিয়নের বালাজ মেম্বারের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের দাবি, এ সময় চারজন পুলিশ সদস্য আহত হন। কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

জেলা পুলিশের তথ্যমতে, জুলহাস মন্ডলের বাড়ি বেড়ার ঢালারচর ইউনিয়নের দড়িরচর গ্রামে। তিনি নিষিদ্ধ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা এবং জুলহাস বাহিনীর প্রধান ছিলেন। তিনি পাবনা, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং স্থল ও নৌপথে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর নামে ওই তিন জেলার বিভিন্ন থানায় হত্যা, অপহরণসহ নয়টি বিভিন্ন অপরাধের মামলা ছিল। এসব মামলায় তিনি পলাতক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, অনেক দিন ধরে জুলহাস মন্ডলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গত সোমবার তাঁকে ঢাকার নিউমার্কেট থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর গতকাল তাঁকে পাবনার আমিনপুর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি তাঁর সহযোগী ও অস্ত্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার মোহন্তের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাঁকে নিয়ে অভিযানে বের হয়। পুলিশ ঢালারচর ইউনিয়নের বালাজ মেম্বারের মোড় এলাকায় পৌঁছালে জুলহাসকে ছিনিয়ে নিতে তাঁর সহযোগীরা গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এর মধ্যে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যান জুলহাস। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলের অদূরে গুলিবিদ্ধ জুলহাসকে উদ্ধার করে পুলিশ বেড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের ভাষ্য, বন্দুকযুদ্ধে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফরিদুল ইসলাম এবং কনস্টেবল রেজাউল ইসলাম, নূরুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান। তাঁদের বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি দেশি পাইপগান, একটি দেশি পিস্তল, দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার মোহন্ত বলেন, জুলহাস মন্ডল এলাকার ত্রাস ছিলেন। তাঁকে নিয়ে তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ অভিযানে বের হলে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।