কোনো রাজনীতিবিদ আমার মতো নির্যাতিত হননি: এরশাদ

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীবন্দরে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন। ছবি: প্রথম আলো
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীবন্দরে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন। ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘আমার ওপর যে পরিমাণ অত্যাচার হয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো রাজনীতিবিদের ওপর হয়নি। ১২ বছর জেলে ছিলাম। আমার পার্টির সবাই জেলে ছিল। তা সত্ত্বেও জাতীয় পার্টি জনগণের ভালোবাসায় আজও বেঁচে আছে।’ এই ভালোবাসার দাবি নিয়ে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান জানান এরশাদ।

আজ শনিবার বেলা ১১টায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীবন্দরে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভালো না। সমস্ত জিনিসপত্রের দাম বেশি। সবকিছু সিন্ডিকেট কন্ট্রোল করে। আর সিন্ডিকেট কোনো দলের হতে পারে বলেন? মানুষ এ অবস্থার পরিবর্তন চায়।’

জাতীয় পার্টির যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন দেশে জিনিসপত্রের দাম কম ছিল উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘এখন একটা মানুষ মাঠে কাজ করে ২০০ টাকা পায়। বর্তমানে ষাট টাকা কেজি চাল কিনলে বউ-বাচ্চার জন্য কী কিনবে? এসব খবর তারা (সরকার) রাখে না। তাদের একটাই কথা, ক্ষমতায় কীভাবে থাকা যাবে। ক্ষমতায় থাকতে গেলে ভোট লাগে। কিন্তু ভোট তো এখন হয় না। মানুষ পরিবর্তন চায়। ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে সুদিন আসবে।’

মানুষ এখন এসব কথা বলতে পারে না উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘এসব কথা বললে, কখন কাকে তুলে নিয়ে যায় ঠিক নেই। এ কারণে মানুষ রাতে বাসায় ঘুমাতে পারে না। পুলিশের চাকরি নিতে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা, শিক্ষকের চাকরি নিতে ১০ লাখ টাকা লাগে। সব ব্যাংক খালি। একটা ব্যাংকেও টাকা নেই। যেদিকে তাকান, শুধুই অন্ধকার।’

উত্তরবঙ্গের প্রতি সরকারের কোনো ভালোবাসা নেই বলে অভিযোগ করেন রংপুরের ছেলে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ভালোবাসা না থাকায় এসব এলাকার রাস্তাঘাট ঠিক করা হয় না। এখন ঢাকা যেতে ১৪ ঘণ্টা লাগে।

এ সময় পথসভায় উপস্থিত জনগণ ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে জাতীয় পার্টি কী করবে জানতে চাইলে এরশাদ বলেন, সবার আগে চালের দাম কমাবেন, তারপর সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন।

চিরিরবন্দর জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা সেকেন্দর আলী শাহর সভাপতিত্বে পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, দিনাজপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শফি রুবেল।