ডাস্টবিনের গায়ে রঙিন জামা

শাহবাগে ফুটপাতের পাশে রাখা ডাস্টবিনের গায়ে আঁকা গ্রাফিতি। ছবি: প্রথম আলো
শাহবাগে ফুটপাতের পাশে রাখা ডাস্টবিনের গায়ে আঁকা গ্রাফিতি। ছবি: প্রথম আলো
>
  • নোংরা ডাস্টবিনের গায়ে গ্রাফিতি।
  • ঢাকাসহ বিশ্বের ছয় শহরে ডাস্টবিন-পরিত্যক্ত ভবনের দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে।
  • গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে টেপোগ্রাফি অব নিউরোসিটি নামের প্রকল্পের মাধ্যমে।
  • গ্রাফিতির মাধ্যমে নগরজীবনকে পুনঃ উপস্থাপন করা হচ্ছে।
  • ঢাকার ডাস্টবিনে গ্রাফিতি আঁকছে বৃত্ত আর্ট ট্রাস্ট।

শাহবাগ থানার সামনের ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে হাতও লাগে। কারণ নাক চেপে ধরতে হয় কষে। না হলে ডাস্টবিনের দুর্গন্ধ অনায়াসে ঢুকে পড়বে ফুসফুসে।

তবে গতকাল এই ফুটপাতের পথচারীদের অবাকই করেছে। ময়লার দুর্গন্ধের পরিবর্তে সেখানে রঙের চেনা গন্ধ। নোংরা ডাস্টবিনের গায়ে ভেসে উঠছে ছবি। গ্রাফিতিতে (দেয়ালচিত্র) রঙিন হয়ে উঠছে তা।

ঢাকাসহ বিশ্বের ছয়টি শহরে ডাস্টবিন ও পরিত্যক্ত ভবনের দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে টেপোগ্রাফি অব নিউরোসিটি নামের প্রকল্পের মাধ্যমে। প্রকল্পটির প্রধান কিউরেটর স্যান্ডি ল বলেন, ঢাকার পাশাপাশি কুয়ালালামপুর, জাকার্তা, ব্যাংকক, তাইপে ও নমপেন শহরে এই প্রকল্প কাজ করছে। সবখানেই গ্রাফিতির মাধ্যমে নগরজীবনকে পুনঃ উপস্থাপন করা হচ্ছে। ঢাকার ডাস্টবিনে গ্রাফিতি আঁকছে বৃত্ত আর্ট ট্রাস্ট। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আশপাশের ডাস্টবিনে গ্রাফিতি আঁকবেন সংগঠনটির ১৩ জন চিত্রশিল্পী। এই কার্যক্রম চলবে সোমবার পর্যন্ত।

এর আগে ঢাকার দেয়ালে আঁকা সুবোধ সিরিজের দেয়ালচিত্রগুলো অনেকের দৃষ্টি কাড়ে। বিষয়টি নিয়ে দুই দফায় ‘সুবোধ কেন পালাবে’ এবং ‘এবার ভোরের অপেক্ষায় সুবোধ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে প্রথম আলো। শাহবাগ থানার সামনে বড় দুটি, ছোট একটি পরিবহনযোগ্য ডাস্টবিন আর তাদের ঘিরে রাখা স্টিলের বেড়ায় লেগেছে গ্রাফিতি। পেয়েছে নতুন রূপ।

একটি ডাস্টবিনে ‘টেপলু চাঁদুই’ নামের গ্রাফিতি এঁকেছেন শিল্পী জুনায়িদ মোস্তফা। শিল্পী বললেন, ‘বাচ্চাদের অনেক সময় আমরা আদর করে এমন সব নামে ডাকি। ডাস্টবিন আমাদের শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে ব্যবহৃত হয়। অথচ এর খেয়াল রাখার কেউ নেই। এ জন্য ডাস্টবিনকে আদর করে টেপলু চাঁদুই লেখা।’

আরেকটিতে আঁকা হয়েছে ‘পরি’ নামের গ্রাফিতি। যেন পরি তার জাদুর কাঠি দিয়ে পরিচ্ছন্ন রাখবে শহরকে। আরেকটি ডাস্টবিনের গায়ে আঁকা গ্রাফিতির নাম ‘গুডবাই ব্লু স্কাই (বিদায় নীল আকাশ)’। এতে দেখা যায়, ম্যানহোলের ভেতর থেকে একটি শিশু হাত উঁচু করে চিৎকার করছে। আঁকিয়ে পারভেজ হাসান বলেন, শহরে এখন আকাশ দেখা যায় না। শিশুরা ঘরবন্দী। ম্যানহোলকে ঘরের সঙ্গে তুলনা করে এই গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে।

শিল্পীদের আঁকা দেখছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শরিফ হোসেন। তাঁর উপলব্ধি, সব কটি ডাস্টবিনই যদি এমন রঙিন করা হয়, তাহলে শহরটাও রঙিন হয়ে উঠবে।

ঢাকায় এই প্রকল্পের কিউরেটর মাহবুবুর রহমান বলেন, গ্রাফিতিগুলো এখন চারুকলার পাশে করা হচ্ছে। এটা দেখে শহরের অন্য অংশেও তা করা যায়।