২৬ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের দাফন

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রবাসী ছোট ভাইয়ের মরদেহ আনতে গিয়ে বড় ভাই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মাত্র ২৬ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের দাফনে তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। 

জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের ধারকি মণ্ডলপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমানে দুই ছেলে চার মেয়ে। বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৫০) ও ছোট ছেলে ফেরদৌস হোসেন (৪২)। ফেরদৌস হোসেন ১১ মাস আগে মালয়েশিয়া যান শ্রমিকের চাকরি নিয়ে। গত ২৭ জানুয়ারি তিনি এক সড়ক দুর্ঘটনায় মালয়েশিয়ায় মারা যান। তাঁর পরিবার গত সোমবার মৃত্যুর খবর পায়।

ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই দিন ঢাকায় রওনা দেন দেলোয়ার হোসেন। ঢাকায় ছেলের কাছে ওঠেন। মালয়েশিয়া থেকে ফেরদৌস হোসেনের মৃতদেহ গত শুক্রবার রাত দুইটায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছায়। লাশবাহী গাড়ি ভাড়া করে বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় শুক্রবার রাত আটটার দিকে দেলোয়ার হোসেন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলোয়ার হোসেন গত শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় মারা যান।

প্রবাসী ফেরদৌস হোসেনের অন্য স্বজনেরা গত শুক্রবার রাতে তাঁর মরদেহ বিমানবন্দর থেকে জয়পুরহাটের ধারকি গ্রামে নিয়ে আসেন। গতকাল শনিবার বেলা ১টা ৩০ মিনিটে ফেরদৌসের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আর আজ রোববার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে দেলোয়ার হোসেনের জানাজা শেষে ছোট ভাইয়ের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়।

ফেরদৌস ও দেলোয়ার হোসেনের চাচাতো ভাই আলম হোসেন বলেন, মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ফেরদৌস মারা যান। দেলোয়ার হোসেন নওগাঁ জেলার পোরশা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কর্মচারী হিসেবে চাকরি করতেন। দুই ছেলের মৃত্যুতে বৃদ্ধ বাবা লুৎফর রহমান ও মা পিয়ারা বেগম শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ফেরদৌসের স্ত্রী নাসিমা বেগম এবং দেলোয়ারের স্ত্রী নাছিমা খাতুন শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।