গৃহবধূকে ধর্ষণ, তিনজনের যাবজ্জীবন

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অস্ত্র দেখিয়ে হত্যার ভয় দেখানোর দায়ে প্রত্যেক আসামিকে আরও সাত বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জোর করে ঘরে ঢোকার দায়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিল্লুর রহমান এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন নেছারাবাদ উপজেলার রঙ্গাকাঠি গ্রামের সুনীল সিকদারের ছেলে বিধু সিকদার (৩৭), একই গ্রামের স্বর্ণকুমার সমাদ্দারের ছেলে সুব্রত সমাদ্দার (৩৫) এবং উপজেলার ব্যাশকাঠি গ্রামের গোবিন্দ হালদারের ছেলে গৌতম হালদার (৩৬)।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে বিধু সিকদার, সুব্রত সমাদ্দার এবং গৌতম হালদারসহ চারজন ওই গৃহবধূর ঘরে ঢোকেন। এ সময় পরিবারের লোকজনের ঘুম ভেঙে যায়। এরপর আসামিরা ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে পরিবারের লোকজনকে জিম্মি করে এবং গৃহবধূর স্বামীকে বেঁধে ফেলেন। এরপর চারজন পর্যায়ক্রমে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে আসামিরা স্বর্ণালংকারসহ ঘরের মালামাল লুট করেন।

এ ঘটনায় ওই বছরের ২১ আগস্ট গৃহবধূর শ্বশুর বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একই বছরের ১২ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নেছারাবাদ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল ইসলাম তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক আজ সোমবার এ রায় দিলেন। রায় ঘোষণার সময় বিধু সিকদার ও সুব্রত সমাদ্দার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গৌতম হালদার পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (বিশেষ পিপি) আবদুর রাজ্জাক খান। আসামিপক্ষে ছিলেন কানাল লাল বিশ্বাস।